skip to Main Content

সঙ্গানুষঙ্গ I ম্যাসকুলিন জুয়েলারি

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়েই পরতে হয় অলংকার। বুঝতে হয় সময় আর গন্তব্য। লিখেছেন সারাহ দীনা

আজকাল পুরুষেরাও পরছে গয়না। ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে।
ছেলেদের অলংকারের জৌলুশে তাক লাগিয়ে দিতে কয়েকটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে। প্রথমেই আসবে তিনটি প্রশ্ন। ‘কোথায়? কেন? কখন?’ এগুলোর উত্তর জানা থাকলে গয়না বেছে নেওয়া যায় অনায়াসেই।
প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে ‘কোথায়’ যাচ্ছেন। অফিসে যাওয়ার সময় ড্রেসকোড মেনেই তৈরি হতে হয়। সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। ফ্যাশনেবল জুয়েলারি কিছুতেই নয়। ফরমাল অলংকারেই সই। যেমন বেল্ট, টাই পিন, কাফলিং। সলিড ডিজাইনে ভালো লাগবে। মেটালই ভালো মানায় ফরমালে। সিলভার আর গোল্ডের বাইরে না যেতে চাইলে অক্সিডাইস ও তামায় খুঁজে নেওয়া যেতে পারে স্বাচ্ছন্দ্য।
অফিস অ্যাটেয়ার কুল কালচারের হলে তখন হিসাব ভিন্ন। এখানে সেভাবে বিধিবিধান নেই। তাই সেখানে জুয়েলারি খুলে রাখা নিয়ে না ভেবে সিম্পল ফ্যাশন স্টেটমেন্ট সঙ্গী হতে পারে। যেমন একটি ব্রেসলেট কিংবা ফিঙ্গার রিং, আবার নেকেও থাকতে পারে সরু চেইন। এ ক্ষেত্রে নকশায় সিম্পলিসিটি মাস্ট। মেটাল অথবা বিটস- যেটাই হোক না কেন। এর বাইরে রোপ, ওয়্যারও থাকতে পারে। এলিমেন্ট যা-ই হোক, নকশায় বাহুল্য বর্জন আবশ্যক। মিনিমালিজম এ সময়ে মাস্ট।
দাওয়াতে যাওয়ার জন্য ওয়্যারড্রোব প্ল্যানিংয়ে পছন্দের জুয়েলারি বেছে নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে সময়। সকাল, দুপুর, নাকি রাত? আমাদের দেশে সাধারণত দুপুর আর রাতেই দাওয়াতের চল রয়েছে। দুপুরের পোশাক পরিকল্পনায় দেখা যায় হালকা শেডের আউটফিট। সাদা সব সময়েই সেরা, এর সঙ্গে প্যাস্টেল কালারে মন মজেছে এখনকার ফ্যাশন-সচেতনদের। দাওয়াতে পাঞ্জাবি পরলে গলায় থাকতে পারে স্লিম চেইন। স্যুট হলে হাতে পরা যেতে পারে ব্রেসলেট। এ ধরনের রঙের পোশাকের সঙ্গে মেটাল অথবা বিটস বেছে নেওয়া যায়। মেটালের ক্ষেত্রে গোল্ড আর সিলভারেই ভালো লাগবে। ভারী নকশায় না গিয়ে হালকায় হতে পারে মানানসই। রিস্ট ওয়াচের সঙ্গে লেয়ার করলে খেয়াল রাখতে হবে হাতের সঠিক সাইজের ব্রেসলেট। আংটি ব্যবহার করলে এক হাতে দুটির বেশি আঙুলে না পরাই ভালো। অতিরঞ্জন নয়, সামান্যতেই হয়ে উঠতে হবে অনন্য।
আড্ডার কোনো ড্রেসকোড নেই। পছন্দই এখানে মুখ্য। তৈরি হওয়ার সময়ে আলমিরা খুলে পছন্দের পোশাকটি বের করে ভাবতে হবে জুয়েলারি নিয়ে। বিডস, মেটালের পাশাপাশি ওয়ার আর উডও হতে পারে। আউটফিট যদি হয় ওয়েস্টার্ন ধাঁচের, এর সঙ্গে চাংকি জুয়েলারি দারুণ ফাংকি লুক এনে দিতে পারে। আইকনিক স্টেটমেন্ট রিং এবং লং চেইন মানিয়ে যাবে। বেসিক ক্লথিং এবং চাংকি জুয়েলারির মিংগেলিং হতে পারে। পেনডেন্টসহ চেইন, ফিঙ্গার রিং আর ব্রেসলেটের ক্ষেত্রে থিম
মাথায় রেখে বেছে নেওয়া যায়। পছন্দই প্রাধান্য পেতে পারে। সেটা কোনো ব্র্যান্ড লোগো, কান্টি, অ্যানিমেল, প্ল্যানেট, ব্যান্ড, জনরা কিংবা কোনো ওয়ার্ড- যা-ই হোক না কেন।
আরও কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। প্রথমেই ম্যাচ আর মিস ম্যাচের বিষয়। ম্যাচিং নিয়ে অল্পবিস্তর ভাবলে বেশ সুন্দর একটা টুইনিং হবে অ্যাকসেসরিজে। ঘড়ি এবং আংটি- দুয়ে মিল থাকলে দারুণ মানাবে। আবার ফরমালে বেল্টের বাকলের সঙ্গে কাফলিংয়ের মিল রাখতে হবে। জাংক কিংবা মিনিমাল জুয়েলারিতে টুইনিং বেশ মানায়। লাউড জুয়েলারির ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, লেস ইজ মোর। মাঝারি থেকে বিগ সাইজের রিং কিংবা থিক ব্রেসলেট পরলেই যথেষ্ট।
পিয়ারসিংয়ের জুয়েলারির ক্ষেত্রে সিম্পলেই বাজিমাত। পিয়ারসিং দৃশ্যমান হলে সেটি অ্যাকসেসরিজেই প্রধান ফোকাস পয়েন্ট। এর পাশাপাশি আরও গয়না ব্যবহার করতে চাইলে ওভার লোড দেখাবে কি না, সেদিকে নজর রাখা দরকার। পিয়ারসিং ফেসে হলে গলায় কিছু না পরে হ্যান্ড অ্যান্ড ফিঙ্গার অ্যাকসেসরিজ বেছে নেওয়া যেতে পারে। ইয়ার পিয়ারসিং করা হলে নেক জুয়েলারিতে সাদামাটা চেইন বেছে নেওয়া যায়। লেয়ার করতে চাইলে ভিন্ন লেংথের দুটি চেইন পরা যেতে পারে।
জুয়েলারির ট্রেন্ড ফলো করতে চাইলে ব্রিডেড ব্রেসলেট রাখতে হবে সংগ্রহে। গর্জাস ব্ল্যাকের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কালারের ধরনের ব্রেসলেট থাকলে লেয়ার করে পরে নেওয়া যাবে। ঘড়ির সঙ্গেও লেয়ার করা যায় এ ধরনের ব্রেসলেট।
ইয়াররিংয়ের ক্ষেত্রে স্পাইক হুপ ডিজাইন বেশ বাজার মাতাচ্ছে। গোল্ডেন এবং অক্সিডাইজ- দুটিই রাখা যেতে পারে গয়নার বাক্সে। স্কালও ফিরেছে নতুন করে। লাওনের আলাদা ফ্যান বেইজ সব সময়ই আছে। তাই এর চাহিদা থাকবে এবারেও। জোডিয়াক সাইনের প্রতি আগ্রহ থাকলে সে অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়।
পেন্টনের মতে, ২০২১-এ মেনস ফ্যাশন জুয়েলারির জগতে ইয়েলো আর গ্রে রাজত্ব করবে। ট্রেন্ড ফলোয়াররা মনে রাখতে পারেন এ দুটি কালারের কথা। কেয়ারফুললি কেয়ারলেস লুকে নিজেকে সাজিয়ে নিতে চাইলে স্টাকিং ব্রেসলেট পরে নেওয়া যায়। এখানে ইনডিভিজুয়াল স্টাইল তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া যাবে, কেনার আগে তাই নিজের পছন্দ নিয়ে ভাবতে হবে।
নেক জুয়েলারিতে চেইন অথবা বিডস লাইনে এবার চলবে ২৬ থেকে ৩০ ইঞ্চি। একটু লম্বাটে চেইন সংগ্রহে না থাকলে চটজলদি যোগ করে নেওয়া যায়।
বিশ্বে এসেছে পরিবর্তন। অফলাইন থেকে অনলাইনে যোগাযোগ হচ্ছে বেশি। ভিডিও কনফারেন্স সাইট জুম থেকে এসেছে নতুন জুয়েলারি ট্রেন্ড। জুম জুয়েলারি নামে টাইটেলিং হচ্ছে এর। এসব মিটিংয়ে ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজের ক্ষেত্রে ব্রোচের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এতে এবার সাবজেক্ট গুরুত্ব পাবে। পছন্দের সঙ্গে মিল রেখে ব্রোচ বেছে নেওয়া যায়। শুধু ঘরে নয়, বাইরেও এই স্টেটমেন্ট জুয়েলারি জনপ্রিয় হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কোট, কটি, স্কার্ফের সঙ্গে সঙ্গে হ্যাটও ব্যবহার করবে ফ্যাশনিস্তারা।
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top