skip to Main Content

ফিচার I আ শর্ট টেল অব জর্ট

শুরুটা ষাটে। সত্তর, আশি পেরিয়ে নব্বইয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। সম্প্রতি সিগনেচার স্টাইলে পরিণত হয়েছে সেলিব্রিটিদের কল্যাণে। পারফেক্ট পেয়ারিংয়ে স্টাইল কোশেন্ট বাড়বে আলবত

জর্টস। নাম দেখে মনে হচ্ছে, শর্টস লিখতে গিয়ে ভুলে জর্টস লেখা হয়েছে? না, ব্যাপারটি তা নয়। অবশ্য শর্টসের সঙ্গে এর একরকম সম্পর্ক আছে বলা চলে। অনেকটা একই ঘরানার পোশাক। জিনস ও শর্টস—এই দুটোর মেলবন্ধনে এই নামের সৃষ্টি। অর্থাৎ ফ্যাব্রিকটি হওয়া চাই জিনস, আর লেন্থে ছোট। মজা না? আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রায় ত্রিশ বছর পর ফ্যাশন বিশ্বে জর্টস আবার নিজ অবস্থান পুনরুদ্ধার করছে। ফিরে এসেছে জোরেশোরে। কারণ, এটি মূলত নব্বইয়ের দশকের পোশাক। ভাবা যায়! সেই কত আগের একটি স্টাইল ইদানীং সামারে ফ্যাশনেবল এবং অন-ট্রেন্ড লুক তৈরি করতে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফ্যাশন আসলে ঘুরেফিরে আসে, সেটিই আবার প্রমাণিত।
এটিকে এক অর্থে তারুণ্যের পোশাকও বলা যায়। কমফোর্ট, কুলনেস ও কিউরিসিটি—এই তিন শব্দ মিলিয়ে যদি কোনো পোশাক তৈরি হয়, সেটি জর্টস হতে পারে অনায়াসে। কেন? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর আগে শুরুটা জেনে নেওয়া যাক। আইকনিক এই ডেনিম শর্টস, ফ্যাশনপ্রেমীদের প্রথম নজর কাড়ে সেই ৯০-এর দশকে। তারপর থেকে প্রায় এক দশক ধরে সেই জনপ্রিয়তা অব্যাহত ছিল। প্রাথমিকভাবে অবশ্য হিপহপ ফ্যাশনিস্তাদের কাছেই এর কদর ছিল। একধরনের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে তারা এটি পরতেন। অনেকটা নিজেকে আলট্রা কুল প্রমাণ করার জন্য পরার মতো। তবে ধীরে ধীরে এটি মূলধারার ফ্যাশনে ঢুকে পড়ে। আর একসময় রীতিমতো ট্রেন্ড হয়ে ওঠে। ফ্যাশন বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনের কারণ ছিল সেই তিনটি। আরাম, বহুমুখিতা (ভার্সাটাইলিটি) এবং কুল লুক এফেক্ট তৈরির সক্ষমতা। এক পোশাকে এই তিন সুবিধা পাওয়া যায় বলেই এর সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে ওঠে ফ্যাশনপ্রেমী তরুণসমাজ। ঠিক একই কারণে বর্তমানেও জর্টস আরেকটি পুনরুত্থানের সম্মুখীন। ফ্যাশন উৎসাহী যারা নস্টালজিয়া হাতড়ে বেড়ান এবং যারা একঘেয়ে স্টাইলিংয়ে নতুনত্ব যোগ করার চেষ্টা করছেন—উভয়ের কাছেই এর আবেদন প্রবল। পাশাপাশি জেনারেশন জি-ও অতীতের এই স্টাইল সাদরে লুফে নিয়েছে।
জর্টসের অভিনবত্ব হচ্ছে, এর মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। যে কেউ ইচ্ছা করলেই পরতে পারেন। ভ্রমণ, খেলা কিংবা দৈনন্দিন যাতায়াতে মানানসই ও আরামদায়ক। কোন ধরনের জর্টস মানানসই, তা বেছে নিতে প্রথমত, শারীরিক ফিটনেস মাথায় রাখা চাই। এমন একটি ডিজাইন বেছে নেওয়া যায়, যা শরীরের আকৃতি বা ফিগারকে কমপ্লিমেন্ট করে কিংবা সহজ করে বললে তার সঙ্গে মানিয়ে যায়। এ ছাড়া পরতে যেমন আরাম বোধ হয়, তেমনি স্টাইলের কোটাও পূরণ হয়ে যায়। অনেক রকম জর্টস রয়েছে। সব কটিতেই যে সবাইকে ভালো লাগবে, এমন নয়। ক্ল্যাসিক বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে হাই ওয়েস্টেড জর্টস, বয়ফ্রেন্ড-স্টাইল জর্টস। কিংবা যারা নিজেকে রাফ অ্যান্ড টাফ হিসেবে প্রদর্শন করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ডিসট্রেসড এবং ফ্রেড ডিজাইন। নিজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্তটি খুঁজে পেতে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যরে জর্টস পরে ট্রায়াল করে নেওয়াই শ্রেয়। তাতে ডিসকমফোর্টের ঝামেলায় ভুগতে হবে না অন্তত।
কিসের সঙ্গে পরা যাবে? জর্টস স্টাইল করার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায়গুলোর একটি হলো বেসিক টি-শার্টের সঙ্গে পেয়ার করা। যেকোনো সলিড কালার টি-শার্ট, জর্টস এবং একটি স্পোর্টস শু—ব্যস, বেরিয়ে পড়ার জন্য একদম তৈরি। তবে টি-শার্টের রঙের ক্ষেত্রে সাদাও বেছে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, ফ্যাশন গবেষকেরা মনে করেন, অন্যান্য রঙের চেয়ে এটি অনায়াসে জর্টসের মর্যাদা অনেক গুণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। লুকটাকে আরও প্রমিনেন্ট করে তোলার জন্য সাদা টি-টাকে কোমরের কাছে গুঁজে নিয়ে ওয়েস্টলাইনে যোগ করা যেতে পারে চমৎকার একটি বেল্ট।
এটি ফরমাল পোশাক নয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়ানো, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বা দৈনন্দিন কাজে পরার জন্য। তাই এর সঙ্গের জুতাও হওয়া চাই ইনফরমাল—কেডস বা স্যান্ডেল। তবে কেউ যদি অ্যাথলেটিক মাইন্ডেড হন এবং জর্টস স্টাইলে সেই স্পোর্টি ভাব ফুটিয়ে তুলতে চান, তাহলে একটু এক্সট্রা এফোর্ট তো দেওয়াই যায়। জর্টসের সঙ্গে বেছে নেওয়া যায় একটি ট্যাঙ্ক টপ এবং স্নিকার। ক্যাজুয়াল ও কমফোর্টেবল লুকের জন্য সলিড কালার ট্যাঙ্ক টপ, আর কুলিং এফেক্ট বা আরও আরামদায়ক অনুভূতি পেতে চাইলে ট্যাঙ্কের ওপরে একটি লাইটওয়েট হুডি অথবা একটি জিপ-আপ জ্যাকেট পরে নেওয়া যায়। অ্যাথলেটিক নান্দনিকতা বাড়াতে যোগ করা যেতে পারে বেসবল ক্যাপ।
তবে যারা এই সিম্পল লুকে ঠিক সন্তুষ্ট নন, আরও পলিশড ও পরিশীলিত সামারস্টাইলের কথা চিন্তা করছেন, তাদের জন্য রয়েছে অন্য অপশন। বডিফিট জর্টসকে একটি সাধারণ বডিস্যুট বা ট্যাঙ্ক টপ এবং একটি ব্লেজারের সঙ্গে পরে নেওয়াই যেতে পারে এ ক্ষেত্রে। একটি সলিড হালকা রঙের বডিস্যুট, সঙ্গে লাইট সামার ব্লেজার। এই কম্বিনেশন কিছুটা ইউনিক। নৈমিত্তিক এবং সাজসজ্জার মধ্যে নিখুঁত ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম; বিশেষ করে সামার নাইটের জন্য একেবারে আদর্শ। সঙ্গে স্ট্র্যাপি হিল আর ঝোলানো ব্যাগ। ব্যস, লুক কমপ্লিট।

 রত্না রহিমা
মডেল: ষড়ঋতু
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: রাইজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top