skip to Main Content

ফিচার I ইয়োগা স্কিন

এমন লুক, যা পেতে যোগব্যায়ামের দরকার। কিন্তু তা মিলছে মেকআপের এক অভিনব কৌশলে। হালের সেরা উদ্ভাবন

অনুসন্ধান অনুযায়ী, শুধু শরীর আর মনের সুস্থতাই নয়, নিয়মিত ইয়োগা নিশ্চিত করে ত্বকের সৌন্দর্যও। শরীরচর্চার বিজ্ঞানসম্মত এই পদ্ধতি বাড়ায় রক্তসঞ্চালন। দেহাভ্যন্তর থেকে দূর করে দূষণ। তাই ত্বকের জন্য মোটামুটি ফেশিয়ালের মতো কাজ করে একেকটি ইয়োগাসেশন। দেখায় উজ্জ্বল আর শিশিরসিক্ত। কিন্তু ইয়োগা যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি ঝক্কিরও। প্রতিদিনকার ব্যস্ত জীবনযাত্রায় মোটামুটি সাধনাতুল্য। তাই বলে কি সুন্দর ত্বক নাগালের বাইরে থেকে যাবে! তা নয়। বরং বেছে নেওয়া যেতে পারে ‘ইয়োগা স্কিন’ বিউটি লুক। এতে ইয়োগা স্কিন মিলবে ইয়োগা না করেই। যুক্তরাজ্যের মেকআপ আর্টিস্ট সারাহ হিলের আবিষ্কার এটি। ইতিমধ্যেই তা ঝড় তুলেছে ইনস্টাগ্রামে। সেই বরাতে শুধু সৌন্দর্যসচেতনেরাই নন, সেলিব্রিটি মেকআপ আর্টিস্ট আর বিউটি ভ্লগাররাও দারুণ পছন্দ করেছেন ‘ইয়োগা স্কিন’। ফলে ক্রমশই বছরের শীর্ষস্থানীয় ট্রেন্ডের জায়গা দখল করে নিচ্ছে এ লুক। সারাহর মতে, ত্বক দেখায় সুস্থ, উজ্জ্বল, স্বচ্ছ ও প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর। এ মেকআপ লুক ত্বকের ভেতর থেকে আভা তৈরির কাজ করে। ত্বক দেখায় প্রচলিত মেকআপে মুখোশ তৈরির যে ঝুঁকি থাকে, তা এতে নেই। সারাহ এর নাম দিয়েছেন ‘ইয়োগা’ স্কিন। অনেকেই কোরিয়ান গ্লাস বা ক্লাউডলেস স্কিনের সঙ্গে তুলনা করলেও তাঁর মতে এ ত্বক এগুলো থেকে আলাদা। কারণ, কোরিয়ান ট্রেন্ডগুলোতে হয় ত্বকে নিখুঁত দাগছোপহীন ক্যানভাস তৈরির চেষ্টা করা। কিন্তু ‘ইয়োগা স্কিন’ মেকআপে ত্বককে করে তোলা হয় সতেজ, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল আর পুষ্ট। খুঁতমুক্ত না দেখালেও দেখায় শিশিরসিক্ত। এই মেকআপ লুক তৈরির কাজটিও সহজ। লাগে কম সময়। এমনকি পছন্দ ও প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজ করে নেওয়া যায় পুরো প্রক্রিয়া এবং এতে ব্যবহৃত পণ্যগুলো।
‘ইয়োগা স্কিন’ মেকআপ লুকের শুরু আর দশটা লুকের মতোই। অর্থাৎ সারতে হবে স্কিন প্রেপিং। প্রস্তুত করতে হবে ত্বককে। প্রয়োজনীয় ক্লিনজিং সেরে মেখে নিতে হবে ময়শ্চারাইজার। অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝে। এটা শুষে নেওয়ার সময় দিতে হবে ত্বককে। তারপরই পরিপূর্ণভাবে তৈরি হবে ত্বক, মেকআপের জন্য। পরিষ্কার ত্বকে প্রথমেই মাখতে হবে প্রাইমার। এ ক্ষেত্রে সিলিকন ফ্রি গ্লো বুস্টিং প্রাইমার ‘ইয়োগা স্কিন’ লুক তৈরির জন্য বেশি উপযোগী। এটি মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে দেয় চকচকে উজ্জ্বল ফিনিশ, যা ‘ইয়োগা স্কিন’ লুক তৈরির কাজ সহজ করে। পুরো মুখে প্রাইমার মাখিয়ে নিতে হবে ভালোভাবে। তারপর সামান্য সময়ের অপেক্ষা। প্রাইমার সেট হবার জন্য। এ সময় সেরে নেওয়া যেতে পারে ককটেইলিংয়ের কাজ। হাতকে প্যালেটের মতো ব্যবহার করা যেতে পারে এ ক্ষেত্রে। হাতের তালুতে প্রথমেই নিতে হবে ফাউন্ডেশন। লাইটওয়েট, সিল্কি ফর্মুলার, ডিউই ফিনিশের লিকুইড ফাউন্ডেশন খুব কার্যকর। নিতে হবে তিন থেকে চার পাম্প। শিয়ার থেকে মিডিয়াম কাভারেজ হলেই যথেষ্ট। এতে মেশাতে হবে এক ফোঁটা ফেশিয়াল অয়েল। রোজগোল্ড, আমন্ড, আরগান থেকে রোজহিপ সিড অয়েল— বেছে নেওয়া যাবে পছন্দ অনুযায়ী। তারপর এতে দিতে হবে এক ফোঁটা স্ট্রোব ক্রিম বা লিকুইড হাইলাইটার। গোল্ডেন টোনেরগুলো এ লুকের জন্য বেশি মানানসই। তারপর দিতে হবে এক ফোঁটা গ্লো ড্রপ। সুপার শাইনি স্কিনের জন্য। এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে মুখত্বকে। হাত দিয়ে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করেই এই মেকআপ ককটেল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন সারাহ। কারণ, এতে বেশ কিছু উপকারিতা আছে। এভাবে মেকআপ মাখানোর ফলে রক্তসঞ্চালন বাড়ে, ত্বক রিলাক্সড হয়। ফোলা ভাব দূর করে। তৈরি হয় পারফেক্ট বেজ। যা সুন্দরভাবে বসে ত্বকে। টিকে থাকে দীর্ঘ সময়। একটা লেয়ার তৈরির কিছুক্ষণ পর পরবর্তী লেয়ার দিতে হবে। কাক্সিক্ষত কাভারেজ পাওয়া পর্যন্ত। তারপর দিতে হবে কনসিলার। শুধু প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে, যেমন— চোখের নিচের কালো দাগ ঢাকতে কিংবা দাগছোপ ঢাকতে ব্যবহার করা যেতে পারে কনসিলার। কিন্তু খুব বেশি যেন না হয়ে যায়। এতে সাজের স্বাভাবিকতা হারিয়ে যাবে। কনসিলার সেট করার জন্য আলতো করে পাউডার বুলিয়ে নেওয়া যায় কনসিলারের ওপর। তারপর ক্রিম ব্লাশ বা ক্রিম ব্রোঞ্জার ব্যবহার করা যেতে পারে। সব শেষে পুরোটা পাউডার দিয়ে সেট করে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ফ্লাফি অর্থাৎ ফোলা ব্রাশ দিয়ে মেকআপ একদম হালকা করে পাউডার বুলিয়ে নিতে হবে ত্বকে। বেকিং করা একদম মানা। সেটিং স্প্রেও ব্যবহার করা যাবে। তবে তা হতে হবে একদম অ্যালকোহল মুক্ত।
ব্যস, এভাবেই অঙ্গুলিমেয় পণ্য ব্যবহারে চটজলদি তৈরি আপনার ‘ইয়োগা স্কিন’।

 জাহেরা শিরীন
মডেল: তৃণ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top