skip to Main Content

এই শহর এই সময় I ক্যানভাস ও প্রসেনিয়াম

ব্যক্তির মনের বিমূর্ত জগতের সঙ্গে সময়ের বহুমাত্রিক সম্পর্ক প্রতিভাত হয়েছে শিল্পী ইকবাল বাহার চৌধুরীর ‘নুড়ি ও কণা’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনীতে। ১৪ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে চলে ‘নুড়ি ও কণা’র প্রদর্শনী। শিল্পীর প্রায় ৬০টি চিত্র ততে প্রদর্শিত হয়েছে।
শিল্পীর চিত্রকলার মাধ্যম হলো প্রিন্টিং (মুদ্রণ) বা ছাপচিত্র। ইকবাল বাহার চৌধুরী তাঁর অন্তর্জগতের অনুভূতি ও বহির্জগতের অভিজ্ঞতার সন্নিধি কাঠের ওপর খোদাই করা ছাপচিত্রগুলোয় প্রকাশ করেছেন। বুনেছেন বিমূর্ত এক পরাজগৎ। প্রতীকের মধ্যে প্রবেশ ও প্রতীককে অতিক্রম করে গেছেন। রেখা, রঙ, টোন ও টেক্সচারসহযোগে আলো-আঁধারের মধ্য দিয়ে অগ্রসরমাণ হয়েছেন। ফুটে উঠেছে অতীন্দ্রিয় এক জগত। ‘টেস্ট অব টাইম’ কিংবা ‘অ্যাবজার্ড ম্যুড’ সিরিজ এবং ‘রিলেশন অব টাইম’-এর মতো ছবিগুলো এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যেখানে সময়ের পর্যবেক্ষক হিসেবে ব্যক্তির জাগতিক অভিজ্ঞতা এবং মনের গভীরে তার অব্যক্ত, অতীন্দ্রিয় অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন। মূর্ত করেছেন চারুকলার পরাজাগতিক ভাষ্য।
১৯৮৬ সালে কক্সবাজারে জন্ম নেওয়া ইকবাল বাহার চৌধুরী চারুকলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ থেকে। বেশ কিছু পুরস্কার তিনি অর্জন করেছেন, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘কিবরিয়া ইয়াং প্রিন্টমেকার অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ (১ম স্থান), বাংলাদেশ-জাপান সাম্প্রতিক শিল্প উৎসব থেকে গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড (গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড) ইত্যাদি।
এদিকে ১০, ১১ ও ১২ জুন ঢাকার জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হলো কামালুদ্দিন নীলু নির্দেশিত নাটক ‘স্তালিন’। সাইমন সিব্যাগ মন্টিফিওরের ‘স্তালিন: দ্য কোর্ট অব দ্য রেড জার’, স্ভেৎলানা অ্যালিলুয়েভার ‘অনলি ওয়ান ইয়ার’ ও ‘টোয়েন্টি লেটার্স টু আ ফ্রেন্ড’, ডেভিড পিনারের ‘দ্য টেডি বিয়ার্স পিকনিক’ এবং রোজমেরি সুলিভানের ‘স্তালিন্স ডটার’ বইগুলোর বিভিন্ন তথ্য ও ঘটনার বিবরণ থেকে এই নাটকের চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, সেন্টার ফর এশিয়ান থিয়েটার নাটকটি মঞ্চস্থ করে।
কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া স্তালিনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বাধিনায়ক হয়ে ওঠে এবং সেই সূত্রে তাঁর খেয়ালি ও সৈ¦রাচারী নানা কার্যকলাপ দেখানো হয়েছে এই নাটকে। কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য নিকোলাই বুখারিনকে গ্রেপ্তার ও মৃত্যদন্ড, ট্রটস্কির পলায়ন, তাঁকে হত্যার নির্দেশ, মায়ারহোল্ডের গ্রেপ্তার এবং মৃত্যুদন্ডসহ স্তালিনের নিষ্ঠুরতার নানা বিষয় নাটকে উপস্থাপিত হয়েছে। নাটকটি শুরু হয় লবি থেকে। উপস্থিত সব দর্শককেই প্রতীকীভাবে পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে নাটকে সম্পৃক্ত করতে পরানো হয় স্তালিন ক্যাপ। অভিনেত্রীকে অনুসর করেই দর্শকরা হলে প্রবেশ করেন। অভিনয়, আলোকসম্পাত, আবহ, গান, সঙ্গীত ও প্যারোডি — সবকিছু মিলিয়ে নাটকটি সার্থক। অধিকন্তু, নির্দেশকের সৃষ্টিশীল নিরীক্ষা বিশেষভাবে লক্ষ্যযোগ্য। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে স্তালিনকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপনা নিয়ে। এর জেরে প্রতিবাদ হয়েছে। বিক্ষোভ করেছে নাট্যকর্মীদের একাংশ ও সমাজতান্ত্রিক কিছু সংগঠন। নাটকটি বন্ধ করারও চেষ্টা চালানো হয়। তা সত্ত্বেও প্রদর্শনীর তিন দিনেই এর দর্শক ছিল বিপুল।

 স্টাফ রিপোর্টার
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top