skip to Main Content

সেলুলয়েড I মডার্ন টাইমস

দৈর্ঘ্য ১ ঘণ্টা ২৬ মিনিট ৫২ সেকেন্ড
কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: চার্লি চ্যাপলিন
প্রযোজনা ও সংগীত পরিচালনা: চার্লি চ্যাপলিন
অভিনয়ে: চার্লি চ্যাপলিন, পাওলেত গোদার, হেনরি বার্গম্যান, চেস্টার কঙ্কলিন, টিনি স্যান্ডফোর্ড প্রমুখ
সিনেমাটোগ্রাফি: ইরা এইচ মর্গ্যান, রোন্যাল্ড টেরোহ
সম্পাদনা: চার্লি চ্যাপলিন, উইলিয়ার্ড নিকো
শিল্প নির্দেশনা: জে রাসেল স্পেনসার
হলিউড যখন চলচ্চিত্র মাধ্যমের কৈশোরকে কেবল বিনোদনসর্বস্ব করে তুলতে চেয়েছে, ঠিক তখনই চলচ্চিত্রকে প্রতিবাদের ভাষায় রূপায়িত করেছেন চার্লি চ্যাপলিন। তার ছবিগুলো অনেকাংশেই বুর্জোয়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, যা চূড়ান্ত আকার নিয়েছিল ১৯৩৬ সালে নির্মিত ‘মডার্ন টাইমস’ ছবিতে। কিন্তু তা স্লোগানসর্বস্ব, পোস্টারধর্মী আখ্যানে নয়, বরং শ্লেষ, ব্যঙ্গ আর জীবনের নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ এক শিল্পকর্ম।
চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ক্ল্যাসিক হয়ে ওঠা এই ছবি দেখেননি এমন মানুষ খুব কম। তাই আখ্যান বা ছবির গল্পের পুনরুক্তির প্রয়োজন নেই। তবু স্মরণ করার জন্য বলতে হয়, চ্যাপলিনের লিটল ট্রাম্পসত্তা ভবঘুরে, নিম্নবিত্ত অবস্থায় যান্ত্রিক পৃথিবীতে জীবনসংগ্রাম করে যাচ্ছে। ফ্যাক্টরিতে তাকে হয়ে উঠতে হচ্ছে যন্ত্রের প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু যন্ত্রের প্রযুক্তিগত বিপর্যয় আছে। এই বিপর্যয়ের ভেতর দিয়ে চ্যাপলিন জানিয়ে দিলেন শিল্পবিপ্লবের সুফলকে পুঁজিবাদী সাফল্যে পর্যবসিত করা ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেট দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এই চলচ্চিত্রে সাধারণ মানুষরূপী চ্যাপলিনকে কমিউনিস্ট হিসেবে দেগে দিয়ে কারাবাসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ক্রমে মুক্তি, ওয়েটারের কাজ, প্রেম এবং অভিজাত সমাজের মনোরঞ্জনের জন্য সংগীত পরিবেশনের সময় গানের লিরিক হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে। এই দৃশ্যপ্রবাহে নির্বাক ছবির মধ্যেও সবাক চলচ্চিত্রের উপাদান হাজির করা হয়েছে। ব্যবহার করেছেন প্লেব্যাক। লিরিক হারিয়ে উদ্ভট ও এলোমেলো গান গাইলেন চ্যাপলিন, সেই গান আর তার সঙ্গে মূকাভিনয়ের মেলবন্ধন অভিজাতের সভায় বিনোদন ছড়িয়ে দিল। অথচ ওই গানই ছিল বুর্জোয়া, যান্ত্রিক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেট দুনিয়ার বিরুদ্ধে চ্যাপলিনের চরম ব্যঙ্গ ও প্রতিবাদ। বারবার স্বপ্ন দেখা, স্বপ্নভঙ্গ, জীবনসংগ্রাম, প্রেম এবং শেষমেশ নতুন আশার সন্ধানে ভবিষ্যতের দিকে অগ্রযাত্রাই এ ছবির আখ্যান উপাদান।
নির্বাক ছবি হলেও দৃশ্যান্তরের টেক্সট ছাড়াও কাহিনির গতিপ্রকৃতি, উত্থান-পতন বুঝতে অসুবিধা হয় না। চ্যাপলিন এবং বাকিদের অভিনয়ের পাশাপাশি ছবির শিল্পনির্দেশনা, আবহসংগীত—এ সবকিছুই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বিস্ময়কর। অভিনয়, সংগীত পরিচালনা, সম্পাদনার অংশীদারত্বে চ্যাপলিনের প্রতিভার পাশাপাশি সেট ডিজাইনের ক্ষেত্রে জে রাশেল স্পেনসরের অনবদ্য সৃজনশীলতার সাক্ষ্য বহন করছে এই ছবি। আজকের নব্য উদার অর্থনীতির যুগে, এই প্রযুক্তিসর্বস্বতা ও ভোগবাদের যুগে নতুন করে ছবিটি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। পাশাপাশি চলচ্চিত্রবিদ্যায় এটি আজও প্রাতঃস্মরণীয়।

 অতনু সিংহ

কুইজ
১। ছবিটি কত সালে নির্মিত?
ক। ১৯১৫
খ। ১৯৪৪
গ। ১৯৩৬
২। ছবিতে কিসের বিরুদ্ধে শ্লেষ, ব্যঙ্গ ও প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে?
ক। সামন্তবাদ।
খ। ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেট বুর্জোয়া সমাজ
গ। সাম্রাজ্যবাদ
৩। কী অভিযোগে ছবিতে চ্যাপলিনের চরিত্রটিকে জেলে যেতে হয়?
ক। চুরি
খ। কমিউনিস্টদের মিছিলে যোগদান
গ। সন্ত্রাসবাদ
গত সংখ্যার বিজয়ী

১. শাহরিয়ার আলম, উত্তরা, ঢাকা।
২. সুমিতা রায়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
৩. শিউলি আক্তার, গুলশান, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top