skip to Main Content

সাজসারাই I বিশেষ সময়ের মেকআপ

মেনোপজকালে মানিয়ে নেওয়ার মতো উপকরণেই সাজতে হয়। মুখশ্রীর মাধুর্য প্রকাশে পরিমিতিবোধের প্রয়োগও জরুরি। জানাচ্ছেন জাহেরা শিরীন

মেনোপজ হলেই যে মেকআপ এড়িয়ে চলতে হবে, তা কিন্তু নয়। আবার মুখ ভরে সেটা করাও এ সময় একদম বেমানান। ভারসাম্য বজায় রেখে সাজগোজ করা চাই। দ্য লেস দ্য বেটার- মেনোপজ মেকআপের মূলমন্ত্র এটাই। এ সময় সাধারণ ত্বকসমস্যাগুলো ঢেকে চেহারাকে সুন্দর দেখাতে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু করলেই চলবে। মেনোপজকালীন ডায়েট, ব্যায়াম, জীবনযাপন আর ত্বকযত্নের পাশাপাশি বদলে নিতে হবে মেকআপ প্রডাক্টগুলো। কারণ, হুটহাট হট ফ্ল্যাশে ধুয়ে যেতে পারে এত দিনের ব্যবহৃত ফাউন্ডেশন, এমনকি মাসকারাও। তাই মেনোপজের সময় মানিয়ে, বয়স অনুযায়ী ত্বক-উপযোগী মেকআপ প্রডাক্ট বেছে নিতে হবে। এসব পণ্যের টেকনোলজি বিশেষ এ সময়ের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়, তাই ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রেখে সেজে ওঠার জন্য এগুলো সেরা বিকল্প। এ ছাড়া মেনোপজকালীন ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনের হার কমে যায়। ফলে আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না ত্বক। আর হঠাৎ হট ফ্ল্যাশে ঘেঁটে যেতে পারে মেকআপ। এ ছাড়া এডাল্ট অ্যাকনের বাড়াবাড়িতে চেহারার বেহাল দশা মেনোপজের খুবই সাধারণ সমস্যা। ফটোএজিংয়ের কারণে ত্বকে ভাঁজও খুব দৃষ্টিকটু দেখায় এ সময়। তাই ত্বকের এ সমস্যাগুলো বিবেচনায় রেখে বাছাই করা চাই মেকআপ প্রডাক্টগুলো।
শুরুতেই বেজটা হওয়া চাই বেস্ট ফর্মুলায়। সে জন্য দুটি পণ্য বিউটি বক্সে থাকতেই হবে। পরিণত বয়সের উপযোগী একটি প্রাইমার এবং ফাউন্ডেশন। খেয়াল রাখতে হবে দুটোই যেন পরিণত ত্বকের উপযোগী ফর্মুলায় তৈরি হয়। প্রাইমারটি এমন হওয়া চাই, যা দিনভর হট ফ্ল্যাশের পরও মেকআপকে ত্বকে টিকিয়ে রাখবে। সঙ্গে চেহারার লার্জ পোর, বলিরেখাকে করবে কম দৃশ্যমান। ফাউন্ডেশনও ত্বকের ভাঁজের মধ্যে আটকে যাবে না বরং করবে মসৃণ। মেনোপজের আগে যেসব ফাউন্ডেশন ব্যবহারে ভালো ফল মিলত, পরে তা অতটা ভালো কাজ না-ও করতে পারে। তাই বিশেষ এ সময় উপযোগী অপশনগুলো বেছে নেওয়া দরকার। হালকা কিন্তু ফুল কাভারেজ দেওয়া ওয়াটারপ্রুফ লিকুইড ফাউন্ডেশন এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগী। এতে চেহারায় অনেক লেয়ারের মেকআপ না মেখেই ত্বকসমস্যাগুলো ঢেকে ফেলা যাবে। আন্ডারটোন বাছাইয়েও সাবধানি হওয়া চাই। পিঙ্ক বা নিউট্রাল একদমই নয়- হলুদ আন্ডারটোনের ফাউন্ডেশন হতে হবে অবশ্যই; যা ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করবে। এসপিএফ যুক্ত ফাউন্ডেশন মাখতে পারলে খুবই ভালো। নইলে প্রাইমারের পর সানস্ক্রিন মেখে নিতে ভোলা যাবে না একদমই।
মেনোপজকালীন চোখের চারপাশের কালো দাগছোপ আর ফোলা ভাব খুবই স্বাভাবিক সমস্যা। তা ঢাকতেই চাই মেকআপ। কনসিলার এ ক্ষেত্রে অব্যর্থ। পিচ অথবা গ্রিন টোনের কনসিলারগুলো চোখের চারপাশের নীলচে দাগছোপ আর ডার্ক সার্কেল ঢেকে দেয় অনায়াসে। তার আগে আই প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। হট ফ্ল্যাশের কারণে আই মেকআপ যেন ঘেঁটে না যায়, তা নিশ্চিত করবে এটি। ম্যাট ফর্মুলার আইশ্যাডোগুলোই বেছে নেওয়া ভালো। নিখুঁত আইমেকআপ ছাড়াও পরিণত চোখের কোণের সূক্ষ্ম রেখাগুলো ঢাকতে এগুলোর জুড়ি নেই। আইলাইনার আর মাসকারা- দুটোই হতে হবে ওয়াটারপ্রুফ। হট ফ্ল্যাশের প্রকোপ থেকে বাঁচতে। মাসকারা প্রাইমারও মেখে নেওয়া যায় চোখের পাতায়, যা বাড়তি লেন্থ আর ভলিউম যোগে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। আইব্রাও সাজাতে গাঢ় আইব্রাও পেনসিল ব্যবহার করা যাবে না একদমই, বরং চুলের রঙের সঙ্গে মানায় এমন শেড বেছে নিতে হবে। তারপর হালকা হাতে ছোট ছোট স্ট্রোকেই সাজ দেখাবে ন্যাচারাল। মেনোপজে ঠোঁটের মেকআপ করার সময়ও সাবধানি হওয়া দরকার। কারণ, ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যায় বলে ঠোঁটে এবং এর চারপাশের ত্বকে ভাঁজ পড়তে শুরু করে। হারায় ঠোঁটের পুষ্টভাব, স্বাভাবিক রঙ। ন্যাচারাল শেপও নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় গাঢ় শেডের লিপকালারগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিউটিশিয়ানরা। বেছে নেওয়া যেতে পারে এমন লিপ স্টেইন বা লিকুইড লিপস্টিক, যা ঠোঁটকে শুষ্ক করবে না কিন্তু ফুল কালার কাভারেজ দেবে। শেপ সুন্দর দেখানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে লিপ প্রাইমার এবং লাইনার। ঠোঁটের ভাঁজ দূর হবে কনসিলারে। প্রাকৃতিক লিপলাইন থেকে অনেক বাইরে গিয়ে লিপলাইন না করাই ভালো। এতে করে ঠোঁটের চারপাশে ত্বকের ভাঁজে লিপ প্রডাক্ট ছড়িয়ে যাবে না।
ব্রোঞ্জার আর পিচ টোনের ব্লাশন মেনোপজকালীন ত্বকের জন্য সবচেয়ে জুতসই। পাউডারের বদলে বেছে নিতে হবে লিকুইড অথবা ক্রিমি ফর্মুলারগুলো। মাখতে হবে গালের একদম উঁচু অংশে, ব্লেন্ড করে নিতে হবে ভালো করে, ন্যাচারালি ফ্ল্যাশড স্কিনের জন্য।

মডেল: প্রিয়ম
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top