skip to Main Content

আলাপন I গতানুগতিকতা থেকে বাইরে নতুন কিছুর চেষ্টা করছি – আজহারুল ইসলাম চঞ্চল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সিরামিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক। সিরামিকের সৃজনশীল শিল্পের চর্চা করছেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটার আধুনিকায়ন এবং আরও শৈল্পিক উপস্থাপনের জন্য পেয়েছেন সুখ্যাতি। নিরলস কাজ করছেন সিরামিক শিল্পের বিকাশে। ক্যানভাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এই শিল্পের চর্চা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

ক্যানভাস : সিরামিক নিয়ে কাজের আগ্রহ কবে থেকে, কীভাবে তৈরি হলো?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: চারুকলায় যখন পড়ি, তখন থেকেই সিরামিকের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহ ছিল। কারণ, এটা ভাস্ট একটা সাবজেক্ট। এখানে অনেকগুলো সেক্টর আছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিরামিক, ট্র্যাডিশনাল সিরামিক, ক্রিয়েটিভ পার্ট, স্টুডিও পার্ট আছে। সব কটি মিলে দেখলাম যে এটা খুব ইন্টারেস্টিং একটা বিষয়। এখানে কাজ করার ভালো জায়গা আছে। চারুকলায় পড়ার সময় দ্বিতীয় বর্ষে বিষয় পছন্দ করে নিতে হতো। তখন সিরামিক নিয়েছি। কারণ, এখানে ক্রিয়েটিভ প্র্যাকটিসের পাশাপাশি বাণিজ্যিক জায়গাও আছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল কলকারখানায় এর প্রয়োগ রয়েছে।
ক্যানভাস: আমাদের দেশে সিরামিক শিল্পের চর্চা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: আমাদের দেশে এটা নিয়ে পড়াশোনা হচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল জায়গাগুলো আমরা শেখাচ্ছি। এখন যেমন শিক্ষক হিসেবে শেখাচ্ছি। আগে ছাত্র হিসেবে শিখেছি। যদিও এই সেক্টরে অন্যান্য সেক্টরের মতো যে যার মতো থাকে। সবাই তো আর শিল্পী হতে চায় না। কেউ যদি ম্যাটেরিয়ালিস্টিক সেন্সে জব করতে চায়, কাজ করতে চায় কিংবা বাণিজ্যিক সেক্টরে কাজ করতে চায়, সে ক্ষেত্রে ফাইন্যান্সিয়াল রিটার্নটা বেশ ভালো। এসব কারণ তো এখানে আছেই। আবার নিছক যে একজন শিল্পী হবে, ক্রিয়েটিভ প্র্যাকটিস করবে, সেই সুযোগগুলোও কিন্তু সিরামিকে আছে।
ক্যানভাস: আপনি যেমন ক্রিয়েটিভ প্র্যাকটিসটাই বেছে নিয়েছেন আপনার কাজের ক্ষেত্র হিসেবে…
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: হ্যাঁ, আমি ক্রিয়েটিভ কাজটাই করি। স্টুডিও সিরামিকস নামে আমাদের একটা উইংস আছে। ওখানে নিজের মতো সবকিছু তৈরি করি, কাঁচামাল (র ম্যাটেরিয়ালস) থেকে শুরু করে সবকিছু। যারা পেইন্টিং করে বা অন্যান্য শিল্পমাধ্যমে কাজ করে, ওদের কাঁচামাল তৈরি করতে হয় না। তারা সেটা তৈরিই পায়। ওটা দিয়েই তারা ক্রিয়েটিভ প্র্যাকটিস করে। আর আমাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, ক্লে (মাটি তৈরি) থেকে শুরু করে একদম বার্নিং পর্যন্ত যা কিছু, আমাদের নিজেদেরই করতে হয়। এটাও ঠিক করতে হয় যে আমি আসলে কী কাজ করতে চাচ্ছি। আমি কি বাণিজ্যিক পাট্যার্নে কাজ করব? নাকি ক্রিয়েটিভ কাজ করব? সেখানে স্কাল্পচার করব, নাকি ক্রোকারি করব? প্রতিটি ক্ষেত্রে কাঁচামাল তৈরি থেকে শুরু করে সবকিছুরই আলাদা প্রস্তুতি থাকতে হয়। আমি কী অবজেক্ট তৈরি করব, সেটার সঙ্গে আমার ক্লে তৈরি করা থেকে শুরু করে পোড়ানো পর্যন্ত তার একটা ভাবনা থাকে। কারণ, এক একটা পণ্য, এক একটা গুডস ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় পোড়াতে হয়। এটাকে ম্যাচিউর করার জন্য। কখনো কখনো এটাকে গ্লেজিং করতে হয়।
কানভাস: ঢাকায় সিরামিকের ম্যুরাল, টেরাকোটা দেখা যায়। কিন্তু এর ভাস্কর্য বা স্থাপত্য তুলনামূলক কম। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভাস্কর্যের প্রতিবন্ধকতা আছেই। সেটা সিরামিক কেন, যেকোনো মাধ্যমেই হোক না কেন। ধর্মীয় কারণে এই দেশে ভাস্কর্যের চর্চাটা কম। যদিও সেটা একটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। ভাস্কর্যের প্রধান উপাদান হচ্ছে স্টোন বা পাথর। যেটা শতবর্ষ টিকে থাকে। আমাদের এই অঞ্চলে যেহেতু পাথুরে পাহাড় নেই, ফলে পাথরও পাওয়া যায় না। তাই ভাস্কর্যের চর্চাটা এখানে কম। অন্যদিকে ধর্মীর বিষয় ও রক্ষণশীল চিন্তাভাবনা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে। অন্যদিকে ক্রিয়েটিভ সেক্টরে সিরামিকের ভাস্কর্য হয়। আউটডোরকেন্দ্রিক সিরামিকের ভাস্কর্য সারা বিশ্বে নেই। কেবল ক্রিয়েটিভ জায়গায় এর চর্চা হয়। আমাদের এখানে মূলত সিরামিকটাই কম। এই ডিপার্টমেন্টে প্রতিবছর ১০ জন ছাত্র ভর্তি হচ্ছে। তারা কিন্তু সবাই স্কাল্পচার করবে না। কেউ টেরাকোটায় দক্ষ হবে, কেউবা ভাস্কর্য করছে বা অন্য কিছু করছে। তাই আলাদা করে ভাস্কর্যটা খুব ব্যাপকভাবে হচ্ছে, তা বলা যাবে না।
ক্যানভাস: আমাদের দেশে যারা সিরামিক নিয়ে কাজ করছেন, তাদের সম্পর্কে যদি বলতেন…
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: এখানে ভাস্কর অলক রায় ভীষণ ভালো কাজ করেছেন। ক্রিয়েটিভ ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে। হাতে গোনা অল্প কয়েকজন আছেন এমন। তাদের মধ্যে একজন দেবাশীষ পাল। আমিও কিছু করবার চেষ্টা করেছি। ভাস্কর্যে। সেটা একদম নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, নিজস্ব চিন্তা-চেতনার। নতুন একটা ভাষা দেওয়ার চেষ্টা। এটা একটা ক্রিয়েটিভ পার্ট। এই হলো ভাস্কর্যের অবস্থা। সিরামিক নিয়ে একেকজন একেক জায়গায় কাজ করছে।
ক্যানভাস: আপনার শিল্পচর্চা বা কাজের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে শুনতে চাই।
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: আমি টেরাকোটা নিয়ে কাজ করছি। গতানুগতিক ধারণা থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু চেষ্টা করছি। যেমন টেরাকোটায় যে সংকট ছিল আমাদের, দেখবেন বাংলাদেশের যে টেরাকোটাগুলো দেয়ালে ছিল, তাতে অনেক সংকট ছিল। পারফেক্ট বার্নিং হতো না, শেওলা জমে যেত। প্রস্তুতিটা ঠিক হতো না। কিংবা যেখানে যে জিনিসগুলো আনা দরকার, যে অবজেক্ট থাকা দরকার, সেগুলো হয়নি। অর্থাৎ, অত্যন্ত গতানুগতিক একটা জায়গা ছিল। আমি ওখানে সামান্যতম কাজ করতে পেরেছি। কিছু কাজ করেছি ঢাকায়, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায়। সরকারি-বেসরকারি নানান পর্যায়ে কাজ করেছি। ধীরে ধীরে আমার মতো করে যে জায়গায় যে তাপমাত্রা দরকার, যে অবজেক্ট দরকার, তা নিয়ে কাজ করেছি। সিরামিক যেহেতু খুবই টেকনিক্যাল সাবজেক্ট, তাই এখানে ইনডোরে একধরনের কাজ করতে হয়, আউটডোরে আরেক ধরনের কাজ করতে হয়। আবহাওয়ার বিষয়টা বিবেচনা করতে হয়। রাস্তার পাশে, বাড়িতে বা হোটেলে কি না- এই জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করেছি, এখনো করছি। টেরাকোটাকে অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্টের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। একটা চিত্রকলা আসলে রং আর ফর্ম থাকলে সুন্দর একটা আবেদন তৈরি করে। তাহলে টেরাকোটায় কেন সেটা হতে পারবে না? টেরাকোটায় কোনো গতানুগতিক অবজেক্ট নিয়েই কেন কাজ করতে হবে? মডার্ন যে স্থাপত্য জিওম্যাট্রিক্যাল যে ম্যাটেরিয়াল বা আর্কিটেকচারের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য রেখে কীভাবে কাজ করা যায়, স্পেস ছেড়ে দিয়ে, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। কীভাবে ভিজ্যুয়ালাইজ ক্রিয়েশন বাড়ানো যায়, ওই জায়গাগুলোতে কাজ করেছি।
ক্যানভাস: পোড়ামাটির ভাস্কর্য নিয়ে আপনার বেশ কিছু কাজ রয়েছে…
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: হ্যাঁ, আমি বক্তব্যধর্মী পোড়ামাটির ভাস্কর্য করার চেষ্টা করি। এগুলো একেবারেই এক্সপেরিমেন্টাল ক্রিয়েটিভ পর্যায়ের কাজ। আমাদের দেশে যে মাটি আছে, ওটার সঙ্গে আরও দেশজ উপাদান, উপকরণ মিশিয়ে কীভাবে বিষয়টা দৃষ্টিনন্দন করা যায়, মজবুত করা যায়, দীর্ঘস্থায়ী করা যায়, সে জায়গাগুলোতে আমার কাজ আছে।
ক্যানভাস: সিরামিক শিল্পকে আরও জনপ্রিয় করা বা সৃজনশীল চর্চাকে আরও বাড়ানোর ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগ কি প্রয়োজন?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: আমরা চেষ্টা করছি ক্রিয়েটিভ জায়গাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ জন্য যদিও সামগ্রিক, সামাজিক সচেতনতার ওপর নির্ভরশীল। আর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ তো বটেই। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ঐতিহ্যবাহী যে সিরামিকটা ছিল, সেটিই তো প্রায় বিলুপ্ত। বলা যায় ওখানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ঘটেছে। তাই ঐতিহ্যটা হারিয়ে যেতে বসেছে। আর ক্রিয়েটিভ যে জায়গাটা থাকে ওই যে আমাদের আর্কিটেকচারাল ডেভেলপমেন্ট, ফাইন্যান্সিয়াল বিষয়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না মসৃণ হবে, তত দিন পর্যন্ত এই সেক্টরটা টিকে থাকা কঠিন হবে। তবে উন্নতি হচ্ছে। ধীরে ধীরে। আমরা দেশে অ্যাকাডেমিক্যালি প্র্যাকটিস করছি সিরামিক নিয়ে। এই সেক্টরে দেশে-বিদেশে এক্সপো হচ্ছে। অল্প অল্প করে আগাচ্ছে। থেমে তো নেই। আগে যেমন শিল্পকলা একাডেমিতে এক্সিবিশন হতো সেখানে সিরামিকস, ভাস্কর্যগুলোকে নিরুৎসাহিত করা হতো। কিন্তু এখন এসব নিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রদর্শনী হচ্ছে। ধীরে ধীরে সেই জিনিসটা হবে। আর আপনি জানেন, সিরামিক নিয়ে বাণিজ্যিক জায়গাটায়ও ভালো অবস্থান তৈরি করেছে।
ক্যানভাস: সিরামিক নিয়ে সৃজনশীল চর্চার চেয়ে বাণিজ্যিক খাতে আগ্রহীদের সংখ্যা বেশি। কিন্তু শিল্পটাকেও তো এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপার আছে। বাণিজ্যে আগ্রহের মূল কারণ আসলে কী?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: আমাদের দেশে সরাসরি এর ফিল্ড নেই। আমি সহজ করে বলতে গেলে, পেইন্টিংয়ের উদাহরণ দিই। চিত্রকলা, লেখালেখি বা এই ধরনের সৃজনশীল কাজ আমাদের দেশে যেমন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তেমনি সিরামিক পায়নি। এই জায়গাটা পেতে সময় লাগবে। অর্থাৎ এখানে শিল্পমূল্য সিরামিক ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে কিংবা সৃজনশীল সিরামিক শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে কম। এই শিল্পকর্মের মর্ম বুঝতে আর্ট বোদ্ধা থেকে শুরু করে ম্যাস পিপল পর্যন্ত আরেকটু সময় লাগবে। এই শিল্পে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। প্র্যাকটিসটা কেবল শুরু হয়েছে। ক্ষেত্রটি তৈরি হতে সময় তো লাগবেই। যেহেতু এখানে প্রত্যক্ষ বাজারটা নেই, যেমন ক্রিয়েটিভ ভাস্কর্য বা শিল্পকর্মের রিটার্নটা সরাসরি নেই। তাই এই বিষয়ে পড়–য়ারা উদ্বুদ্ধ কম হচ্ছে। আর যারা ঝুঁকি নিয়ে আগাচ্ছে, তারাও ভালো করছে। যদিও তার পারসেনটেজটা খুবই কম।
ক্যানভাস: যারা এই শিল্পকে ভালোবেসে এ ক্ষেত্রে আসতে চাচ্ছে, তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী? তাদের প্রস্তুতিটা কেমন হওয়া দরকার?
আজহারুল ইসলাম চঞ্চল: এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। ভালোভাবে বুঝেশুনে যদি কেউ কাজ করতে চায়, তবে অনেকগুলো ক্ষেত্র আছে। এই সেক্টরে কাজ করে একজীবনে শেষ করা যাবে না। মোটাদাগে চারটি ক্ষেত্র আছে। আর্কিটেকচারাল সিরামিক নিয়ে কাজ করলে ইট, টাইলস নিয়ে কাজ করা যায়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিরামিক নিয়েও কাজ করা যায়। কাটআউট থেকে শুরু করে হাইভোল্টেজ সিরামিক নিয়ে কাজ করা যায়। ক্রিয়েটিভ পার্টে সবাই যে কাজ করবে, সেটা আমি মনেও করি না। সবাই করবেও না। আবার প্রতিটি সেক্টরেই কাজ করার লোক লাগবে। এখানে যেমন কাজ করার সুযোগ আছে, তেমনি অর্থেরও একটা ব্যাপার আছে। এখানে এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ আছে। কর্মক্ষেত্র তৈরি করারও ব্যাপক সুযোগ আছে। তাই বলব, এটা একটা ভালো সাবজেক্ট এবং এটা যারা নতুন পড়তে আসবে, তাদের ইনটেনশনটা ঠিক থাকতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সিদ্ধান্তহীনতা থাকে। তারা কোন দিকে যাবে? ফলে তাদের সময় অপচয় হয়। কেউ যদি সুনিশ্চিতভাবে জেনেশুনে যেসব সেক্টরে আছে সিরামিককে সেখানে মনোনিবেশ করে, সময় বিনিয়োগ করে তবে সে ক্ষেত্রে ভালো রিটার্ন আসবেই। সুনাম আসবে, অর্থও আসবে।
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top