skip to Main Content

ইভেন্ট I মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ

একজন লম্বা, কৃষকায় ও ফর্সা মডেলকে র‌্যাম্পে দাঁড় করিয়ে বিজয়ের মুকুট পরানো হচ্ছে—সুন্দরী প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালের চূড়ান্ত মুহূর্ত বলতে অনেকে এমন দৃশ্যই ভাবেন। সৌন্দর্য সম্পর্কে সমাজে বহুল প্রচলিত ধারণাই এর কারণ। ফলে স্থূলকায় কাউকে এ ধরনের প্রতিযোগিতায় সাধারণত কেউ প্রত্যাশা করেন না। আশার কথা, বিশ্বজুড়েই এমন বর্ণবাদী ধারণায় পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। আমাদের দেশেও লেগেছে সেই পালে হাওয়া। এতে বেগ এনে দিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো ব্যতিক্রমী সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ’।
প্রতিযোগিতায় নিবন্ধন করেছিলেন ৪০০ জন। প্রাথমিক বাছাই শেষে ২০০ জনের নেওয়া হয় অডিশন। তারপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন রাউন্ডে প্রতিযোগীর সংখ্যা কমে চূড়ান্ত ২১ জনের প্রতিনিধিত্ব ছিল ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড ফিনালেতে। সবাইকে ছাপিয়ে ‘মিস অ্যান্ড মিসেস প্লাস বাংলাদেশ-২০২১’ বিজয়ী হন তাসনুভা তাবাসসুম পারিসা। মুকুট পরিয়ে দেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী দিলারা জামান। ফার্স্ট ও সেকেন্ড রানারআপ হন যথাক্রমে নির্জন মোমিন ও রুমানা হক। এ ছাড়া অভিনয়ে বেস্ট ট্যালেন্টে জান্নাতুল ফেরদৌস ঋতু, বোল্ডনেসে অর্পিতা অধিকারী, নাচে আনজুমান আরা মৌরী, মোস্ট পোলাইটে পাওলা গোমেজ, এক্সপ্রেশনে এশা ইসলাম এবং গানে জীবন্তিকা সরকার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিচারকের আসনে দিলারা জামান ছাড়া আরও ছিলেন রোজিনা, আবিদা সুলতানা, চয়নিকা চৌধুরী, আফরান নিশো, আফজার পরশিয়া, সিলভি মাহমুদ, তৌহিদা আফরোজ, মেসবাউল আলম সাজু, ইভান শাহরিয়ার, ডন সামদানি প্রমুখ। রিয়েল হিরোজ এক্সপো অ্যান্ড কমিউনিকেশনসের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিবিএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ। আয়োজনের ম্যাগাজিন পার্টনার ক্যানভাস।
ঈগল ড্যান্স কোম্পানির সদস্যদের নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় গ্র্যান্ড ফিনালের আনুষ্ঠানিকতা। ছিল নানা আয়োজন। প্রতিযোগীরা মঞ্চে উঠে নিজেদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরেন। তারপর একে একে ক্যাটওয়াকই শুধু নয়; নাচ, গান আর অভিনয়েও প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন তারা।
তাসনুভা তাবাসসুম পারিসা বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য ছিল। অংশগ্রহণের সময় আত্মবিশ্বাস ছিল, অন্তত শীর্ষ পাঁচে জায়গা হবে। বিজয়ীর মুকুট পরায় দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। প্রতিযোগিতা চলাকালে তিন মাসের গ্রুমিংয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে চাই প্লাস সাইজ নারীদের মাঝে। ব্যক্তিগতভাবে ভবিষ্যতে নিজের শখ নাচের কোরিওগ্রাফ এবং অভিনয়ে যুক্ত হতে চাই।’
আয়োজক মালা খন্দকার বলেন, ‘বডি শেমিং বন্ধ করো—স্লোগানে খানিকটা পৃথুলা নারীদের আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারে প্রথমবার দেশে আয়োজিত হলো এই প্রতিযোগিতা। এটি শুধু সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাই নয়, স্বাস্থ্যবতী নারীদের ক্ষমতা ও শক্তি উপলব্ধির মাধ্যমও। কেউ যেন শারীরিক গঠনের জন্য শেমিংয়ের শিকার না হন এবং মানুষের মাঝে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ে, সে লক্ষ্যে কাজ করাই প্রতিযোগিতাটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।’
 ফুয়াদ রূহানী খান
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top