skip to Main Content
এক্সিকিউটিভ থেকে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর: সংগ্রামময় পথে না হারার গল্প

অদম্য ইচ্ছেশক্তি যেমন সফলতার পথ হারিয়ে যেতে দেয় না, তেমনি কঠোর পরিশ্রম পৌঁছে দেয় গন্তব্যে। দেশের খ্যাতনামা ফার্মাসিস্ট শাহরিয়ার আরিফিন এভাবেই লিখেছেন তার সংগ্রামময় সফলতার গল্প। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উঠে এসেছে সেটি।

দেশের অন্যতম শীর্ষ কসমেটিক ও স্কিন কেয়ার প্রতিষ্ঠান রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের বর্তমান এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহরিয়ার আরিফিনের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ইনসেপটা ফার্মাসিটিক্যালসে, প্রোডাকশন এক্সিকিউটিভ হিসেবে। কিন্তু প্রোডাকশন সেক্টরের চার দেয়ালের বাউন্ডারি তাকে দীর্ঘদিন আটকে রাখতে পারেনি। কারণ জন্মগতভাবেই শাহরিয়ার আরিফিন মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে চান। তারই ধারাবাহিকতায় উনি ইউনিমেড অ্যান্ড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালসে তার মার্কেটিং জীবনের ক্যারিয়ার শুরু করেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের পথচলায় সেখানে তিনি জেনারেল ম্যানেজার, মার্কেটিং হিসেবে কাজ শেষ করেন।

কাজ করেছেন বিভিন্ন থেরাপিউটিক এরিনাতে। এর মধ্যে ইউরোলজি, গাইনোকোলজি, অনকোলজি, নেফ্রোলজি ও ডার্মাটোলজি অন্যতম। তারই হাত ধরে ইউনিগ্রুপে ইউনিডার্মার সুচনা যা এখন দেশসেরা ডার্মাটোলজি কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়াও দেশে প্রথম আয়রন সুক্রোজ ইঞ্জেকশনের লঞ্চিংও তার হাতে।

মিস্টার শাহরিয়ার আরিফিনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ডার্মাটোলজিতে। এখন মেডিকেটেড স্কিন কেয়ারের যে ট্রেন্ড শুরু হয়েছে এর হাতেখড়িও তার হাতে; তার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণেই ফ্রেঞ্চ স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড বায়োডার্মা আজ ডার্মাটোলজিস্টদের প্রথম পছন্দ। তিনি বায়োডার্মা বাংলাদেশ ও নেপালের কান্ট্রি হেড হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। ফার্মাসিতে নিজের অর্জিত জ্ঞানের সাথে তার অদম্য ইচ্ছেশক্তি ও কঠোর পরিশ্রম এদেশের মেডিকেটেড কসমেটিকস জগতকে করেছে আরও সমৃদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় রিমার্ক এইচবি লিমিটেডে তার যোগদান দেশীয় স্কিন কেয়ারে উম্মোচন করেছে নতুন দিগন্ত।

দেশীয় ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিকমানের তিনটি ব্র্যান্ড- সিওডিল, ক্যাভোটিন ও ডার্মো-ইউ নিয়ে কাজ করছেন শাহরিয়ার আরিফিন। মাত্র ১৮ মাস সময়ের মাঝেই দেশীয় ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী তিরিশেরও অধিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছেন, যা এদেশে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

মিস্টার শাহরিয়ার আরিফিন মনে করেন, একজন ফার্মাসিস্টের ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রধান দায়িত্ব ঔষধ প্রস্তুতকরণ হলেও যেকোনো পণ্য উৎপাদনে তার কাজের ব্যপ্তি আরও প্রসারিত। ফার্মাসিস্টদের জ্ঞান ও দক্ষতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো গেলে ভোক্তাদের হাতে পৌঁছে যায় নিরাপদ পণ্য। তাই কর্মজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপদ পণ্য নিশ্চিতে কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। তিনি তার দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিজের জ্ঞানভান্ডার আরও বৈচিত্র্যময় করার উদ্দেশ্যে যোগ দিয়েছেন ১৮টিরও বেশি দেশের সম্মেলনে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, এশিয়ান অ্যাসথেটিক অ্যান্ড ডার্মাটোলজি কংগ্রেস (ব্যাংকক, থাইল্যান্ড), ২৪তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব ডার্মাটোলজি (মিলান, ইতালি), জার্নিস ডার্মাটোলজিক ডি প্যারিস 2018 (প্যারিস, ফ্রান্স), ১ম NAOS আন্তর্জাতিক পরিবেশক সভা ডুব্রোভনিক (ক্রোয়েশিয়া), এবং অন্যান্য। নিজের পেশাদার জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করতে তিনি ‘বিল্ডিং এ মেগা ব্র্যান্ড’, ‘ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’, ‘মার্কেটিং এক্সিলেন্স (বিল্ডিং গ্রেট ব্র্যান্ড)’, ‘সেলিং স্কিল’, ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি)’-এর মতো বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন। কোয়ালিটি ইনস্টিটিউট অফ আমেরিকা (কিউআইএ), ‘ডিপার্টমেন্ট অ্যান্ড পিপল ডেভেলপমেন্ট’, ‘ফার্মেসি ম্যানেজমেন্ট’, ‘মার্কেটিং এবং রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স’, ইত্যাদি দ্বারা। এছাড়া এদেশের যুব সমাজকে আরও দক্ষ করে তুলতে তিনি গত ১০ বছর ধরে, কাজ করে যাচ্ছেন কর্পোরেট ট্রেইনার হিসেবে।

ফার্মাসি জগতে নিজের সুখ্যাতি বিস্তারের পাশাপাশি তিনি একজন ফ্রি-ল্যান্সার ফটোগ্রাফার হিসাবেও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। মিস্টার শাহরিয়ার আরিফিন একজন ট্রাভেল ফটোগ্রাফার হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন দেশের সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন তার আলোকচিত্রে, অংশগ্রহণ করেছেন দেশসেরা বিভিন্ন ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীতে। তিনি পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে ফটোগ্রাফিতে বেসিক এবং ফাউন্ডেশন কোর্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি ফার্স্ট লাইট ইনস্টিটিউট অফ ফটোগ্রাফি থেকে স্ট্রিট ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপেও অংশ নেন। বর্তমানে তিনি ফ্যাশন পোর্ট্রেটে ফটোগ্রাফিতেও মনোযোগ দিচ্ছেন।

ব্যক্তিজীবনে তিনি খেলাধুলার প্রতিও খুব উৎসাহী এবং চৌকস। তিনি ছিলেন জেলা পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন এবং জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন। তিনি নাটোরের জেলা ব্যাডমিন্টন দলের একজন সম্মানিত সদস্য। এছাড়াও তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (GBPSA)-এর প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (GBPAA)-এর প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনে, তিনি ক্রিকেট দলেরও অধিনায়ক ছিলেন। শিক্ষাজীবনেও তিনি মেধার চিহ্ন রেখে গেছেন। জনাব আরিফিন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে পিজিডিএমএম (মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট) ডিগ্রির পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ থেকে এম ফার্ম (ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটিং) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি ফার্ম (ফার্মেসি) ডিগ্রি লাভ করেন। কৃতি এই ব্যক্তিত্ব দারুণভাবে তার পেশাজীবন এবং পারিবারিক দায়িত্বের মাঝে ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছেন।

পারিবারিকভাবে ভীষণ সুখী এই মানুষটির ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তালিকা ভালোই লম্বা। পেশাদারী মনোভাবের পাশাপাশি তার উষ্ণ ব্যক্তিত্বের কারণে তিনি তার সহকর্মীদের কাছেও প্রশংসিত এবং সম্মানিত। শাহরিয়ার আরিফিনের মতে, প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও নবীনদের নিত্য নতুন আইডিয়ার মেলবন্ধন এবং তার সঠিক মূল্যায়নই পারে যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে তার স্বপন শিখরে পৌঁছে দিতে।

  • ক্যানভাস অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top