skip to Main Content

কুন্তলকাহন I ব্যায়ামের বদৌলতে

কোনো কিছু ব্যবহার না করেই সুস্থ ও সুন্দর চুল। কিন্তু কীভাবে?

চুল ঝরে যাওয়া নিয়ে সবারই কম-বেশি উদ্বেগ রয়েছে। বয়স, পরিবেশদূষণ, নিম্নমানের ডায়েট, অনিদ্রা, স্ট্রেস বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা- বিভিন্ন কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ও বৃদ্ধি ঘটাতে অনেক ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। তবে অনেকেই চুলে প্যাক মাখাতে বা পার্লারে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে চান না। সে ক্ষেত্রেও উপায় রয়েছে।

সৌন্দর্যের জন্য জীবনধারায় ভারসাম্য বজায় রাখাটা খুব জরুরি। ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখে এবং একটি মজবুত হেয়ার গ্রোথ নিশ্চিত করে। এটি মাথার ত্বকে, মাথার চারপাশে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। চুলের বৃদ্ধি ও সুস্থতার জন্য দৈনন্দিন রুটিনে কিছু ব্যায়াম যোগ করে নেওয়া যেতে পারে।
জগিং একটি চমৎকার ব্যায়াম। এতে ঘাম হয়, যা চুলের জন্য ভালো। কেননা ঘাম মাথার ত্বকে লোমকূপ খুলে দেয় এবং চুলের জন্য ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দিতে সহায়তা করে। জগিংয়ের মতো কার্ডিও এক্সারসাইজ মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সহায়ক, যা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে অনুঘটের ভূমিকা রাখে। এই ব্যায়াম থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে প্রতিদিন অন্তত ত্রিশ মিনিট জগিংয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ব্যায়ামগুলোর মধ্যে একটি হলো স্ক্যাল্প ম্যাসাজ। চুলের ভালো বৃদ্ধির জন্য আরেকটি টিপস নিজেকে রিল্যাক্স রাখা ও কার্যকর স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করা। এটি শুধু রিল্যাক্সিং দেবে, তা নয়, পাওয়া যাবে মজবুত ও স্বাস্থ্যকর চুল। মাথার ত্বকে ম্যাসাজ রক্তপ্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করে, যা চুলের ফলিকলগুলোতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ছড়িয়ে দেয়।
মাথা ও ঘাড় এপাশ-ওপাশ সামনে-পেছনে নিয়ে শরীরচর্চা করা যায়। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এই ব্যায়ামে ঘাড়ের পেশিগুলো প্রসারিত হয়, আশপাশের পেশিগুলোও যেকোনো ধরনের উত্তেজনা ও চাপমুক্ত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। এসব জায়গায় রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রক্তের বর্ধিত প্রবাহ চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে এবং চুলের যেকোনো ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করে।
চুল প্রাণবন্ত করে তুলতে ও দ্রুত বৃদ্ধির জন্য আকুপাংচার কিছুটা অপ্রচলিত একটি পদ্ধতি। এটিকে চুল পড়া কমাতে কার্যকর হিসেবে দেখানো হয়েছে। আঙুলের প্রেশার পয়েন্টগুলোকে উদ্দীপিত করার মাধ্যমে এক্সারসাইজটি কাজ করে, যা চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখে এবং বৃদ্ধি ঘটায়।
আপসাইড ডাউন এক্সারসাইজ। চুলের বৃদ্ধি দ্রুত করতে এবং ভালোভাবে বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে এটি হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর স্ক্যাল্প এক্সারসাইজ। এই পদ্ধতিতে মাথার সাহায্যে একটি ইয়োগা ম্যাটের ওপর শরীরের ভারসাম্য সৃষ্টি করতে হবে। তবে ঘাড়ে কোনো ইনজুরি থাকলে কারও সাহায্য ছাড়া এটি অনুশীলন করা যাবে না। ব্যায়ামটি আয়ত্তে আনতে নিজেকে সময় দিতে হবে।
ঠিকঠাক চিকিৎসা করালে শরীরের আকুপ্রেশার পয়েন্টগুলো চুল বৃদ্ধিতে ভালো কাজ দিতে পারে। এই পয়েন্টগুলোতে চাপ দেওয়ার ফলে চুলের ফলিকল পুনরুজ্জীবিত হয় এবং মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালনে উন্নতি ঘটে। চুলের বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত আকুপ্রেশার পয়েন্টগুলো নখের অগ্রভাগে অবস্থিত। এই পয়েন্টগুলোতে ম্যাসাজ করলে চুলের বৃদ্ধি ও কালো করার জন্য উপকারী হরমোনগুলোকে উদ্দীপ্ত করতে সহায়ক হয়। নখ ম্যাসাজ চুল পড়ার চিকিৎসা ছাড়াও খুশকি দূর করতে এবং অকালে চুল পেকে যাওয়া কমাতে সহায়তা করে। যখন আকুপ্রেশার পয়েন্টগুলোতে প্রায়শই যথেষ্ট চাপ বা ম্যাসাজ করা হয়, তখন ফলিকলগুলো চুলের বৃদ্ধির জন্য মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
কপালভটি প্রাণায়াম শ্বাস-প্রশ্বাসের সবচেয়ে সুপরিচিত যোগব্যায়াম। এটি শরীরকে অক্সিজেনেট করতে সহায়তা করে, একই সঙ্গে পেট ও পেটের পেশি শক্তিশালী করে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং নতুন চুল গজানোর জন্য স্ক্যাল্পে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জোগান দেয়। এটি চুল পড়ার সমস্যা নিরাময়েও কাজ করে।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: নিকি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top