skip to Main Content

ফিচার I মেলানেটেড মেইজ

বিশেষ ধরনের এই ত্বকের পরিচর্যায় চাই এমন প্রডাক্ট, যার উপাদানগুলোর কোনোটিই ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে তার আগে সমস্যাটি চিহ্নিত করা দরকার

যেকোনো ফর্মুলায় বিদ্যমান সক্রিয় উপাদানগুলোই স্কিন কালারের পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যেমন রেটিনল, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা ভিটামিন সি। এগুলো ত্বকের জন্য বেশ ভালো, তবে সাবধানতার সঙ্গে ব্যবহার না করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষত মেলানেটেড ত্বকে জ্বলুনির প্রবণতা থাকলে কিংবা সেনসিটিভ স্কিনের ক্ষেত্রে। হাইপারপিগমেন্টেশন ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ও মেলানেটেড স্কিনের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ ভানিতা রত্তন জানিয়েছেন, কেন মেলানেটেড স্কিন সক্রিয় উপাদানের ক্ষেত্রে আরও বেশি সংবেদনশীল এবং শতকরা কত ভাগ। এ ক্ষেত্রে প্রডাক্টের ব্যবহার কতটুকু হওয়া প্রয়োজন তাও বোঝা দরকার। ঠিকঠাক ফল পেতে এ সম্পর্কে জানা জরুরি।
বুঝতে হবে ত্বকের ধরণ
অ্যাসিড জাতীয় কোনো উপাদান ব্যবহারের আগে ত্বকের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে জানা দরকার। উল্লেখ্য, ত্বকে অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব ও রাসায়নিক যে কোনো পণ্য ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া মাপার জন্য, ১৯৭৫ সালে উদ্ভাবিত হয় ফিটজপ্যাট্রিক স্কেল। এটি মেলিনেটেড স্কিন কোন পর্যায়ে রয়েছে— টাইপ ৪, ৫, ৬ অর্থাৎ পরিসীমা নির্ধারণ করতে পারে। এর মানে হলো, কোনো কোনো ত্বকে মেলানোসাইটগুলো আরও অনেক বেশি প্রতিক্রিয়াশীল, তাই রূঢ় বা রুক্ষ সক্রিয় উপাদান এড়িয়ে চলা ভালো।
কেন মেলানেটেডে স্কিন সক্রিয় উপাদানে আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে? ড. ভানিতা রত্তনের মতে, গাঢ় ত্বকে প্রচুর রিঅ্যাকটিভ মেলানোসাইট (পিগমেন্ট-প্রোডিউসিং সেল) থাকে, জ্বলুনির উৎস এটাই। তিনি স্পষ্ট করেছেন, ককেশীয়দের মতোই আমাদের ত্বকে একইসংখ্যক মেলানোসাইট আছে। মনে করা হয়, জ্বলুনি ও এমএসএইচ (মেলানিন উদ্দীপক হরমোন) উদ্দীপিত হওয়ার ব্যাপারটা হিস্টামিন রিলিজের সঙ্গে জড়িত থাকে।
যেমন ব্রণে সাধারণত জ্বলুনিসহ হাইপার পিগমেন্টেশন বাড়ে, অতিবেগুনি রশ্মি মেলাজমাকে বাড়িয়ে দিতে পারে এবং যেকোনো ইনজুরি যেমন পোকার কামড়েও দাগ হয়ে যায়। ত্বকের যত্নে যেকোনো জ্বলুনি কমানো গুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর উপাদান ব্যবহারের ওপর এর কাক্সিক্ষত সাফল্য নির্ভর করে।
যা এড়াতে হবে
ড্রায়িং অ্যালকোহল, এসেনশিয়াল অয়েল ও সুগন্ধির মতো জ্বলুনিদায়ক এবং ত্বকের জন্য সংবেদনশীল উপকরণ এড়িয়ে চলা দরকার। এগুলো অনুজ্জল ত্বকে পিগমেন্টেশন বাড়াতে পারে। ঝুকি এড়ানোর জন্য এই উপাদানগুলো যথাসম্ভব কম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রেটিনল ব্যবহার করলে তা যেন ০.৫%, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ৫% এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড ৭ ভাগের কম হয়। এ ছাড়া রেটিনল যুক্ত ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটরও এড়িয়ে যেতে হবে। বেনজয়েল পার অক্সাইড যুক্ত সৌন্দর্যপণ্যও রেটিনল অথবা এএইচএর সঙ্গে একদমই ব্যবহার করা উচিত নয়।
কোন প্রডাক্ট মেলানেটেড স্কিনের জন্য জুতসই, সেটি নির্ভর করে ত্বকের সমস্যা এবং তার যত্নের ওপর। যেমন—
হাইপার পিগমেন্টেশনের জন্য
যদি হাইপারপিগমেন্টেশন কমিয়ে ত্বকের দাগছোপ দূর করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ডেইলি রুটিনে টাইরোসিনেজ ইনহেবিটরস যুক্ত পণ্য রাখা উচিত। টাইরোসিনেজ কী? এটি হলো মেলানিন তৈরির প্রয়োজনীয় এনজাইম। হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতে চাইলে আলফা-আরবুটিন, ডায়োইক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি জাতীয় টাইরোসিনেজ ইনহেবিটরস ব্যবহার করা যায়।
ফর ম্যাচুউর স্কিন
ফাইন লাইন বা বলিরেখা দূর করতে হলে, ম্যান্ডেলিক ও ল্যাকটিক অ্যাসিডের মতো কোমল রাসায়নিক এক্সফোলিয়েন্টস যুক্ত পণ্য রূপরুটিনের থাকা জরুরি। আরও ভালো ফল পেতে মিশ্রণে হায়ালুরনিক অ্যাসিড ও পেপটাইড জাতীয় হাইড্রেটিং উপকরণ বেছে নেওয়া ভালো। এগুলো ত্বকের এপিডার্মিস পুনর্গঠন ও দৃঢ়করণে সহায়তা করে। যেকোনো রুটিনের জন্য একটি দুর্দান্ত সংযোজন হলো ভিটামিন এ, সি ও ই, এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের দীপ্তি বাড়িয়ে তুলতে ও পরিবেশগত ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
ডার্ক সার্কেলের জন্য
নায়াসিনামাইড, আলফা আরবুটিন, ডায়োইক অ্যাসিড ও লিকোরিশ রুট এক্সট্র্যাক্টের মতো টাইরাসিনেজ ইনহেবিটরস ব্যবহারে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। আরও যেসব উপকরণের কথা বলা হয়, সেগুলোর মধ্যে ক্যাফেইন, ময়শ্চারের জন্য সোডিয়াম হায়ালুরনেট, উজ্জ্বলতার জন্য সোডিয়াম অ্যাসকরবিল ফসফেট ও রেটিনাইল পালমিটেডের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
এই উপকরণগুলো ত্বকে ব্যবহারের সেরাম, ক্রিম, ক্লিনজার ও মাস্কের মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে কেনার সময় মাত্রা বা পরিমাণের উল্লেখ আছে আছে কি না, দেখে নেওয়া ভালো। কিংবা রূপবিশেষজ্ঞ অথবা স্কিন স্পেশালিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী কেনা সংগ্যহ করতে হবে।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: বৃষ্টি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top