skip to Main Content

টেকসহি I ব্যাগ বাছাইয়ের অন্তরালে

নিরূপিত হবে ক্রেতা-সচেতনতা। ঠাহর করা যাবে প্রকৃতিপ্রেম। বড় বড় বুলি আওড়ানোর দিন কিন্তু শেষ। ইটজ টাইম ফর অ্যাকশন

পরিবেশ-সচেতন কি না, তা প্রমাণিত হবে ব্যবহারের ব্যাগ দিয়ে! কেন নয়। রোজকারের নিত্যসঙ্গী সামান্য এই অ্যাকসেসরিজের যে দারুণ প্রভাব পড়ে প্রকৃতির ওপর। যা অনেকে কেনেন প্রয়োজনে, কেউ কেনেন শখে। হাল ফ্যাশনের আপটুডেট থাকতেও এই অনুষঙ্গ অনেকের কাছে অতি পছন্দনীয়। তাই পুরোপুরি ফাংশনাল না হলেও এর পেছনে টাকা ঢালতে পিছপা হন না অনেক ফ্যাশন-সচেতন মানুষই। কিন্তু ক্রেতার এই ক্রয় আচরণ যে পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা আলবত ভুলে যান অনেকে। অথচ সহজ দুটি ধাপ মেনে চললে যে কেউ হয়ে উঠতে পারেন একজন সচেতন হ্যান্ডব্যাগ কনজিউমার। কী করে!
প্রথম ধাপ: বাজেট
একটা ব্যাগের পেছনে কতটা বিনিয়োগ বাস্তবসম্মত? সবার আগে সেটা নির্ধারণ করা জরুরি। বছরখানেক পরপরই ব্যাগ ছিঁড়ে যাওয়ার অজুহাতে নতুন আরেকটা বগলদাবা করার অভ্যাস যেমন ঠিক নয়, তেমনি শুধু ট্রেন্ডে থাকার জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলে হুটহাট ব্যাগ কিনে ফেলা একেবারেই বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। ফ্যাশনের আসছে সময় কিন্তু একেবারেই সিজনলেস হতে যাচ্ছে। তাই কেনার আগে ভাবতে হবে জরুরতের বিষয়টা। শুধু সময় পাল্টে যাচ্ছে বলেই যে ব্যাগও বদলে ফেলতে হবে, ব্যাপারটা এমন না হলেই বরং ভালো।
দ্বিতীয় ধাপ: কার্যকারিতা ও স্থায়িত্ব
ব্যাগটা আসলে কেনা হচ্ছে কেন? এটা কি প্রতিদিন ব্যবহার করা হবে, নাকি শুধু আনন্দ আয়োজনে বের হবে কাবার্ড থেকে? এই প্রশ্নের উত্তর থেকেই নির্ধারণ করা উচিত হবে ব্যাগের স্টাইল, সাইজ আর ম্যাটেরিয়াল। বডি শেপটাও মাথায় রাখা চাই কেনার আগে। কারণ, ছোট দেহাবয়বে বড় ঢাউস ব্যাগ একেবারেই মানানসই নয়। তাই সচেতনতা জরুরি।
ব্যাগের সচেতন ক্রেতা হতে চাইলে স্থায়িত্বের সঙ্গে সমঝোতা একেবারেই চলবে না। সোয়েড কিংবা স্ট্রতে তৈরি ব্যাগ দারুণ দেখায় বটে, কিন্তু টেকে কম। বিশেষ আয়োজনের জন্য ঠিক আছে, তবে প্রতিদিন ব্যবহারের উপযোগী নয় মোটেই। অন্যদিকে প্লেদার অথবা পিভিসিতে তৈরি সস্তা হ্যান্ডব্যাগ প্রতিনিয়ত বদলে ফেলার শঙ্কা তৈরি করে মনে। আবার, ভালো চামড়ায় তৈরি ব্যাগ তুলনামূলক বেশি টেকে; স্ক্র্যাচও পড়ে না সহজে। তবে কেনার আগে তা-ও যাচাই-বাছাই করে নেওয়া চাই। এথিক্যালি সোর্সড অ্যান্ড ট্যানড লেদারে তৈরি ব্যাগ ব্যবহারেই বেশি উৎসাহিত করে থাকেন পরিবেশসচেতন ফ্যাশনবোদ্ধারা।
প্রতিদিন ব্যবহার উপযোগী ব্যাগের জন্য লেদারই ভালো। কারণ, এটি বেশি সময় ব্যবহার করা যায়। টপ হ্যান্ডেল স্যাচেল, বাকেট কিংবা ক্রসবডি এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে জুতসই। কারণ, এগুলো হ্যান্ডস ফ্রি থাকার সুযোগ করে দেয়; দেয় বাড়তি জায়গাও। ট্যান, নেভি অথবা কালো রঙের ব্যাগগুলো অনেক ধরনের আউটফিটের সঙ্গে মানিয়ে যায়, তাই প্রতিদিন পরার উপযোগী। আর অনেক পকেট থাকলে তো কথাই নেই।
কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগ চাই? হার্ডওয়ারিং লেদার অর্থাৎ অনেকবার ব্যবহার করা যাবে এমন টেকসই চামড়ায় তৈরি ব্যাগ বেছে নেওয়া চাই। টোট অথবা ব্যাকপ্যাক এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে জুতসই। আর অনেক পকেট থাকতেই হবে। বিশেষ আয়োজনের জন্য একটা ক্লাচ ব্যাগই যথেষ্ট। যাতে প্রয়োজনীয় সবকিছু সুন্দরভাবে এঁটে যায়। তবে সাইজে যেন খুব বেশি বড় না হয়। বোল্ড কালার আর ফান ম্যাটেরিয়ালে তৈরি হলে সবচেয়ে ভালো। সিকুইনের তৈরিগুলো কিন্তু দারুণ।ঘুরতে যাওয়ার জন্য টোট হতে পারে পারফেক্ট ক্যারিঅন ব্যাগ। প্রতিদিনকার জরুরি জিনিস এতে সহজেই এঁটে যাবে। ইজি অ্যাকসেসেবলও বটে। ডাফল অথবা উইকেন্ডার ব্যাগ শর্ট ট্রিপের জন্য বেস্ট।
সাসটেইনেবলি এই ব্যাগগুলো কেনার সহজ সমাধান? যেকোনো সাসটেইনেবল ব্র্যান্ড থেকে পছন্দের ব্যাগটা বেছে নেওয়া। সার্টিফাইড হলে তো আরও ভালো। সাসটেইনেবল ম্যাটেরিয়াল যেমন ক্রোম ফ্রি ভেগান লেদার, রাফিয়া কিংবা কটনে তৈরি ব্যাগগুলো এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে। অনেক ব্র্যান্ড তো আপসাইকেলড, রিসাইকেলড আর ভিনটেজ ম্যাটেরিয়াল দিয়েও স্টাইলিশ ফাংশনাল ব্যাগ তৈরি করছে এখন। ব্যাগ বাছাইয়ের সময় বাড়তি বা কম খরচ—কোনোটাই ভালো নয়। সস্তায় বস্তা ভরে মনে মনে খুশি হলেও কিছুদিন পর ব্যাগের বেহাল দশা বুকে জ্বালা ধরাবে। তাই হুটহাট সিদ্ধান্ত না নিয়ে ধীরেসুস্থে চিন্তা করে আগানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। প্রশ্ন করতে হবে নিজেকে—‘ব্যাগটা কি আসলেই সব চাহিদা মেটাচ্ছে?’ ট্রেন্ড বা সিজনের জোয়ারে গা ভাসানো কিন্তু ভীষণ বোকামি এ ক্ষেত্রে; বরং বাস্তবতা চিন্তা করে ব্যাগ কিনলে তাতে লাভ বেশি। খোদ ক্রেতা এবং পরিবেশ—উভয় পক্ষেরই।
 ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top