skip to Main Content
বীথি আফরিনের কস্টিউম ডিজাইন

এ বছরে দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এবং সিলভার স্ক্রিন– দু জায়গাতেই দেখা গেছে তার বেশ কিছু কাজ। ডিটেইলিংয়ে কেড়েছে নজর। পোশাক পরিকল্পনাতেও দেখা যাচ্ছে দক্ষতা। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন তরুণ কস্টিউম ডিজাইনার বীথি আফরিন।

ক্যানভাস: কস্টিউম ডিজাইনিংয়ে কীভাবে এলেন?

বীথি আফরিন: আমি জীবনে সব সময় ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চেয়েছি। ছবি আঁকতে ভালবাসতাম। পড়াশোনা ইউডা চারুকলায় ছিল। ফ্যাশন ভালো লাগত। পড়াশোনা শেষে কিছুদিন পটের বিবি ফ্যাশন হাউসে কাজ করেছি। পরবর্তীকালে, ২০১৭ সালে চ্যানেল আইয়ের ‘সাত ভাই চম্পা’ সিরিজের শুরুতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে যোগ দিই। একই সিরিজের ৫০তম পর্ব থেকে আমি কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করি। এভাবেই কাজ শুরু করা।

ক্যানভাস: মোট কয়টি কাজ করেছেন?

বীথি আফরিন: সেভাবে গুনে দেখিনি। তবে এখন পর্যন্ত তিনটি ফিচার ফিল্ম করেছি। তার মধ্যে ‘সুড়ঙ্গ’ এ বছর মুক্তি পেল। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য ওটিটি কাজ ‘বিলাপ’, ‘জাগো বাহে’, ‘রেডরাম’, ‘টান’, ‘ফ্লোর নাম্বার সেভেন’, ‘সাইলেন্স’, ‘ইন্টার্নশিপ’, এবং আরও দুটি কাজ মুক্তির অপেক্ষায় আছে।

ক্যানভাস: সবচেয়ে পছন্দের কাজ কোনটি?

বীথি আফরিন: ‘এই গল্পের নাম নেই’ (ক্লোজ-আপ কাছে আসার গল্প ২০১৯), ‘জাগো বাহে’ এবং ‘সুড়ঙ্গ’।

ক্যানভাস: আপনার অনুপ্রেরণা কে?

বীথি আফরিন: এডিথ হেড, মণীশ মালহোত্রা এবং সমসাময়িক কস্টিউম ডিজাইনার ভিরা কাপুর। বাংলাদেশে সাইমুন জাহান দোলা।

ক্যানভাস: একজন কস্টিউম ডিজাইনার পোশাক পরিকল্পনা করার জন্য কী কী প্রস্তুতি রাখেন?

বীথি আফরিন: আমার কাছে ডিজাইনের প্রথম ধাপ হচ্ছে স্ক্রিপ্ট ব্রেকডাউন করা, চরিত্রের আদর্শ ও মুড বুঝতে পারা, সেই অনুযায়ী টিমের সঙ্গে বসে রং ও স্টাইল সেট করা। এমন কিছু ডিজাইন করা যা সেই গল্পের বর্ণিত সময় ও অনুভূতিকে রিফ্লেক্ট করে। একই সঙ্গে যা বাস্তবমুখী এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কস্টিউমের ওয়েদারিং খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা একটি ডিজাইনকে একটি চরিত্রের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করে। আর প্রস্তুতি হিসেবে, অবশ্যই শুটিংয়ের পূর্বে ট্রায়াল ও লুক-সেট করা। গুরুত্বপূর্ণ সিনের জন্য ব্যাকাপ কস্টিউম রাখা। কন্টিনিউয়াস সিনে মিল রাখা। কস্টিউমে চরিত্রের ট্রানজিশন লক্ষ্য রাখা। কস্টিউম সংরক্ষণের ব্যবস্থাদি লক্ষ্য রাখা।

ক্যানভাস: কাজ করে আনন্দ পান?

বীথি আফরিন: অবশ্যই। আমি আমার কাজকে ভালোবাসি। আমার কাছে কস্টিউম ডিজাইনিং এক ধরনের মেডিটেশনের মতো।

ক্যানভাস: আমাদের দেশে কস্টিউম ডিজাইনিং কীভাবে আরও সহজ হতে পারে?

বীথি আফরিন: বাংলাদেশে এখনো কস্টিউম ডিজাইন নিয়ে প্রথাগত কোনো কোর্স নেই। ফ্যাশন ডিজাইন হয়তো কস্টিউম ডিজাইনিংয়ে সাহায্য করতে পারে; তবে একজন ডিজাইনারকে ইতিহাস, শিল্প-সংস্কৃতি, থিয়েটার ও ফিল্মমেকিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিত। যা তাকে ফিকশনাল ফ্রেম বুঝতে সাহায্য করবে। আমরা সবাই কাজ করতে করতে অথবা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কাজ দেখে অনেক কিছু শিখছি। সঠিক গাইডলাইন পেলে নতুনদের জন্য কাজ করতে সুবিধা হবে। আমাদের দেশে কস্টিউম ডিজাইনকে এখনো সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, এবং গতবছর থেকে ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড ছাড়া কোথাও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃিত দেওয়া হয় না। তবে আমি আশাবাদী, সময় বদলাবে। আমরাই সময় বদলে দেব!

ক্যানভাস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

বীথি আফরিন: আমি নিজেকে আগামী বছরগুলোতে আরও ভালো কাজ করতে উদ্যমী করে তুলতে চাই। ফিল্ম নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিতে চাই। এবং আন্তর্জাতিক প্রোডাকশনে কাজ করতে চাই। সেইজন্য চেষ্টা করছি আমার কাজের ভালো একটি পোর্টফোলিও বানাতে।

ক্যানভাস: আপনার স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাই।

বীথি আফরিন: আমার স্বপ্ন আন্তর্জাতিক সিনেমায় পোশাক পরিকল্পনা করা।

  • সারাহ্/ ক্যানভাস অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top