skip to Main Content

আড্ডা I কিউরেশন আর এজুকেশনের পাশাপাশি চাই বড় প্ল্যাটফর্ম

বিশ্বজুড়ে বিনোদনের নতুন ধারা ওয়েব সিরিজ এবং ওয়েব সিনেমা। সে বাতাস আমাদের দেশে লাগলেও ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে গড়ে উঠতে সময় লাগবে। আপাতত যারা বিনোদনের এই নতুন ভুবনে পদচারণ করছেন, তাদের ভাবনা ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটনের ওয়েসিস লাউঞ্জে ইফতার আড্ডায় উঠে এসেছে নতুন এই মাধ্যমের ভালো-মন্দ, ইতি ও নেতিবাচক দিক। আর ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা। এ নিয়ে আড্ডা জমিয়ে দেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মাহজাবিন রেজা, আদনান আল রাজীব, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, নুহাশ হুমায়ূন, নাসিফ আমীন খান, সৈয়দ আহমেদ শাওকী এবং মাহমুদুল হাসান আদনান। লিখেছেন জাহিদুল হক পাভেল

উনিশ শতকের শেষে রুপালি পর্দায় সিনেমার যাত্রা শুরু হলেও এর বাণিজ্যিক বিকাশ ঘটেছে আরও প্রায় অর্ধশতাব্দী পর। মানুষের বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে সিনেমা দখল করে নেয় বড় একটি জায়গা। এরপর বিশ শতকের শুরুতে আসে টেলিভিশন। বিনোদন পৌঁছে যায় মানুষের বসার ঘরে; আর এখন সেটা চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। পরবর্তী অর্ধশতকে টেলিভিশন ও সিনেমার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটেছে। প্রযুক্তির সামগ্রিক উন্নয়নে সেই বিনোদনের মাধ্যম এখন মানুষের আঙুলের ডগায়। যাকে বলা হচ্ছে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম। যেখানে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের স্ট্রিমিং সাইট। এই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারা ওয়েব ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ।

অমিতাভ রেজা চৌধুরী

আড্ডার শুরুতেই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের নানা বিষয় তুলে ধরেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি শুরু থেকে পৃথিবীর সব জায়গায় বেড়ে উঠেছে নিজস্ব পরিমন্ডলে। যেমন সিনেমা। শুরুতে শিল্পের একটি মাধ্যম হিসেবে সিনেমা আত্মপ্রকাশ করলেও এটা ধীরে ধীরে তার ব্যাপ্তি ঘটিয়েছে। নির্বাক থেকে হয়েছে সবাক। পৌঁছেছে গণমানুষের কাছে। তখনই শুরু হয় এর বাণিজ্যিক প্রসার। আমি বলতে চাই, অন্যান্য যেকোনো ইন্ডাস্ট্রি যেভাবে ডেভেলপ করেছে, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপড সেভাবে হয়েছে। শুধু আর্ট ফর্মের বিস্তার ঘটাতে সিনেমা তৈরি করা হলে তা কখনো গণমানুষের হয়ে উঠত না। সাধারণ মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগাতে গিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ নিয়েছে। এরপর যখন টেলিভিশন এসেছে, তৈরি হয়েছে নতুন প্ল্যাটফর্ম, নতুন কনটেন্ট। একইভাবে নানা সময়ে নতুন অনেক কিছু যোগ হয়, যেমন—শব্দ বা সাউন্ড। নির্বাক সিনেমা থেকে সবাক সিনেমা তৈরি শুরু হয়। অনেক সময় কথা উঠেছে, সিনেমা হয়তো বিলীন হয়ে যাবে কখনো। মূলত কিছুই শেষ হয়ে যায় না। শুধু এর ধারা বদলায়। তৈরি হয় নতুন নতুন প্ল্যাটফর্ম। যার ভিজ্যুয়াল কনটেন্টও নতুন। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের আবার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। যেমন প্রডাকশন, ডিস্ট্রিবিউশন ও এক্সিবিশন (স্ক্রিনিং)। টিভি, সিনেমা কিংবা ওয়েব—প্রতিটি প্ল্যাটফর্মকে এই ধাপগুলো পেরিয়ে যেতে হয়।

আদনান আল রাজীব

এর মধ্যে এক্সিবিশনের মাধ্যম ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে। এখন এসে পৌঁছেছে মানুষের হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে। সুতরাং এর আলাদা একটি ভাবনা আছে। যে ভাবনা থেকে তৈরি হচ্ছে ভিন্ন ধরনের গল্প, উপস্থাপনা ইত্যাদি। এর একটি সুবিধা আছে, আবার অসুবিধাও আছে। সুবিধা হচ্ছে ওয়েবে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম না থাকা। আর অসুবিধা হচ্ছে নিজেকে কন্ট্রোল করা। আমার মনে হয় ওয়েব, টিভি, সিনেমাকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করার কিছু নেই। তবে টেকনিক্যালি কিছু পার্থক্য রয়েছে। এক একটির ফ্রেম সাইজ যেমন আলাদা, ঠিক তেমনই প্রতিটির প্রকাশভঙ্গিও ভিন্ন। ওয়েবে ল্যান্ডস্কেপ খুব একটা কাজ করে বলে আমার মনে হয় না। ওয়েব অনেক বেশি ডায়ালগ ও গল্পের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি সিনেমার স্টারের যে দাপট, ওয়েবে সেটি নেই। এখানে সাইকোলজিক্যালি দর্শকেরা অনেক বেশি যুক্ত। ওয়েব প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আমরা মূলত এখনো শিখছি। এ জন্য প্রয়োজন কিউরেটর। আমাদের দেশে এই চর্চা নেই বললেই চলে। কিউরেটর থাকার সুবিধা হচ্ছে, সে পুরো প্রডাকশনটি নিজের মতো সাজাবে। আর পরিচালক তার গল্পটি বলে যাবে। এর আগে প্রয়োজন বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। আমাদের নিজস্ব কোনো ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এখনো তৈরি হয়নি। আজ আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তরুণ নির্মাতা, স্ক্রিপ্টরাইটার, প্রযোজক রয়েছেন। যারা ইতিমধ্যেই কাজ করেছেন এই প্ল্যাটফর্মে। তাদের অভিজ্ঞতা শুনলে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
নুহাশ হুমায়ূন : ওয়েব প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, এখানে এমন কিছু গল্প বলা যায়, যেগুলো টিভি কিংবা সিনেমার জন্য উপযুক্ত নয়। পাশাপাশি জনার বা প্রকৃতি অনুযায়ী ওয়েব কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। যেমন ম্যাজিক রিয়েলিজম, হরর, থ্রিলার ইত্যাদি। এই চর্চাটা আমার কাছে ইতিবাচক। ওয়েব প্ল্যাটফর্মের আলাদা একটা শক্তি রয়েছে। ইন্টারন্যাশনালি যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। কিন্তু আমাদের দেশের ওয়েব দর্শকেরা আসলে কী দেখতে চান, তা এখনো নির্দিষ্ট নয়। আমাদের আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এমনকি টেকনোলজির দিক থেকেও আমাদের ওয়েব প্ল্যাটফর্মকে আরও উন্নত হতে হবে।

কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়

মাহমুদুল হাসান আদনান: ওয়েব কনটেন্ট নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, এখানে একটি গল্প তুলে ধরতে, সেই গল্পের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে তা ইতিবাচক। কেননা এতে গল্প বলার ধরনে পরিবর্তন আনা যায়। ওয়েব প্ল্যাটফর্মটি যেহেতু একেবারেই নতুন, সুতরাং এখানে কাজ করার অনেক জায়গা রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ওয়েব মাধ্যমে নতুন গল্পের সঙ্গে সঙ্গে নতুন ধরনের দর্শকও তৈরি হবে।
কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় : আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ বানানোর অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, এটি তৈরির প্রস্তুতিটাই আলাদা। নাটক কিংবা বিজ্ঞাপনের কাজে হাত দেওয়ার আগে যে ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, ওয়েব সিরিজের গল্প নির্বাচন থেকে শুরু করে শুটিং, পোস্ট-প্রডাকশন—সব জায়গাই ছিল ভিন্ন। ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে গিয়ে প্রথমেই যে বিষয়টি আমাকে অনুপ্রাণিত করে, তা হচ্ছে এখানে কাজের স্বাধীনতা অপরিসীম। তবে নিজেকে কন্ট্রোল করার বড় একটি দায়িত্বও রয়েছে। দর্শককে কতটুকু দেখাব। গল্পের নতুন উপাদান কী হতে পারে। আমি থ্রিলার গল্প নিয়ে কাজ করেছি। দর্শক কাজটি কীভাবে গ্রহণ করবেন, তা আগে থেকেই বলে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলা যায়, ওয়েব প্ল্যাটফর্মে গল্পগুলো যত বেশি অরিজিনাল হয়ে ওঠে, দর্শক তত বেশি গ্রহণ করেন। ভালো একটি কনটেন্ট তৈরি করতে অনেক বেশি টাকা কিংবা সেলিব্রিটি সমাগম লাগবে, তা নয়। কনটেন্টকে কীভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, সেটাই মূল বিষয়।

নাসিফ আমীন খান

সৈয়দ আহমেদ শাওকী: আমাদের দেশীয় ওয়েব কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে শুরুতেই আমরা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। ওয়েব ফিল্ম বা কনটেন্টের ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের কোনো শক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি না হলেও দেশের দর্শকেরা ইতিমধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল ওয়েব কনটেন্টে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। সুতরাং আমরা যখন নিজেদের ওয়েব কনটেন্ট তৈরি করব, এই বিষয়গুলোতে প্রাধান্য দিতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়েব অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে মূলত দুটি বিষয় কাজ করেছে। প্রথমটি হচ্ছে ওয়েব কনটেন্ট টিভি ও সিনেমার মাঝামাঝি একটি জায়গা। আবার টিভি সিরিয়ালে অনেক বিষয়ে সীমাবদ্ধতা ছিল, ওয়েব সিরিজে তা নেই। ফলে অনেক বেশি এক্সপেরিমেন্ট দেখা যায় ওয়েবে। যা দর্শকদের আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার অভিজ্ঞতার কথাই যদি বলি, প্রজন্ম টকিজ নামে ওয়েব সিরিজটি যখন আমরা দর্শকের সামনে নিয়ে আসি, তখন বেশ ভালো সাড়া পাই। কারণ, এই সিরিজে বেশ কিছু এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল। আরও একটি মজার বিষয় রয়েছে আন্তর্জাতিক ওয়েব প্ল্যাটফর্মে। তা হচ্ছে টেকনোলজি। নেটফ্লিক্সের কথাই যদি ধরি, তারা প্রত্যেক দর্শককে আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণ করে। যেমন একজন দর্শক কোন জায়গায় স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে ফেলছে, তা-ও তারা খুঁজে বের করে।
নাসিফ আমীন খান: ওয়েবের মাধ্যমে একটি নিউ মিডিয়ার জন্ম হয়েছে। যার ধরন, গড়ন একেবারেই আলাদা। আগে যা বিজ্ঞাপনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু নিউ মিডিয়ায় নির্ভরশীলতা তৈরি হচ্ছে কনটেন্টের ওপর।

সৈয়দ আহমেদ শাওকী

কনটেন্ট এখন নিজস্ব একটি জায়গায় দাঁড়িয়েছে। পুরো বিষয়টিকে টেকনো কালচারাল বিহেভিয়ার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন অনেকে। এর মধ্যে আবার দুটি আলাদা বিহেভিয়ার রয়েছে। একটিকে বলে বিয়িং-ওয়াচিং এবং স্ন্যাকস বিহেভিয়ারে। বিয়িং-ওয়াচিং হচ্ছে লাগাতার সিরিজ দেখে যাওয়া এবং স্ন্যাকস বিহেভিয়ার হচ্ছে একটু একটু করে প্রায় সব কনটেন্টে চোখ বোলানো। সব মিলিয়ে বলতে গেলে ওয়েবে কনটেন্টের সক্রিয় একটি প্রকাশকাঠামো তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশের জন্য এই তত্ত্বগুলো পুরোপুরি কাজে আসে না। কারণ, আমাদের এখনো নিজস্ব বড় কোনো ওয়েব প্ল্যাটফর্ম নেই।
আদনান আল রাজীব: ওয়েব কনটেন্ট নিয়ে ভাবার আগে আমাদের প্রয়োজন নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম। যেখানে আমরা নিজেদের গল্প বলতে পারব। কারণ, আমাদের দেশের দর্শকেরা এখন বাইরের ওয়েব সিনেমাগুলো দেখছে। তাদের চাহিদাও তৈরি হচ্ছে ভিনদেশি কাঠামোতে। আমি মনে করি, আমাদের কাছে ভিন্নধারার কনটেন্ট রয়েছে। এই কনটেন্টগুলো তুলে ধরতে প্রথমেই প্রয়োজন নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম।
ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পর নির্মাতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এখানে সেন্সর কীভাবে কাজ করে। এবং প্রচলিত ধারার সেন্সর ওয়েবে প্রয়োজন আছে কি না।

নুহাশ হুমায়ূন

আদনান আল রাজীব: ওয়েবে যেহেতু কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই, তাই সেল্ফ সেন্সরের মধ্য দিয়েই আমাদের এগোতে হবে। বাইরের দেশের ওয়েব সিরিজে দেখেছি, কোনো কিছুরই কমতি থাকে না। দর্শকও দেখছেন। ওয়েবের পুরো বিষয়টা খুবই ব্যক্তিগত। একজন দর্শক এককভাবে ভিজ্যুয়াল উপভোগ করেছেন। তবে স্ক্রিন শেয়ার করতে হচ্ছে না। তাই পরিচালকের মতো দর্শকের সেল্ফ সেন্সর অ্যাপ্লাই করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমরা যখন বাংলাদেশের জন্য ওয়েব কনটেন্ট তৈরি করব, এভাবে খোলামেলা কোনো কিছু দেখানো যাবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ, সামাজিকভাবে আমরা অনেক বেশি দায়বদ্ধ।
কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়: আমার মনে হয় কনটেন্ট হবে বয়স অনুযায়ী। প্রতিটি কনটেন্টের শুরুতে ঘোষণা দেওয়া থাকবে, এটি কারা দেখতে পারবে।
যেকোনো প্ল্যাটফর্মের জন্যই বাজেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবের জন্যও তাই। বাজেট নিয়ে প্রযোজক মাহজাবিন রেজা তুলে ধরেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

মাহজাবিন রেজা: ওয়েব কনটেন্টের বাজেট টিভি থেকে কিছুটা বেশি হলেও অনেক বেশি বলা যাবে না। আমাদের নিজস্ব বড় কোনো প্ল্যাটফর্ম তৈরি না হওয়ায় বাজেটের সঠিক কোনো পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে না। বাইরের দেশের সঙ্গে তুলনা করলে তো আমাদের চলবে না। এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি সেখানে অনেক বড়। সে অনুযায়ী তারা প্রডাকশন বাজেট তৈরি করে। আমাদের এখানে তা হয় না। তবে আমি এটুকু বলতে চাই, আমাদের পরিচালকেরা যে অঙ্কের বাজেট পাচ্ছে, সেটুকুতেই ভালো কনটেন্ট তৈরি করছে।

মাহজাবিন রেজা

আদনান আল রাজীব: আমাদের উচিত গল্প অনুযায়ী পুরো কনটেন্টের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা এবং প্রডাকশন ডিজাইনও সেভাবে করা। একটি গল্পকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বড় করে তুললে বাজেট ও কনটেন্ট—দুটোতেই ঘাটতি দেখা যাবে।
অমিতাভ রেজা চৌধুরী: আমি বলতে চাই, ভালো কিছু কাজ দিয়ে জায়গাটি তৈরি করতে হবে। তবেই বড় প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের কনটেন্ট নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হবে। দিন শেষে এটিও আসলে একটি পণ্য। যারা প্রডিউস করে তারা ভাবে, এই প্রডাক্ট দিয়ে ব্যবসা কেমন হবে। এই হিসাবনিকাশেই বাজেট নির্ধারিত হয়। আমরা যদি বড় একটি দর্শক তৈরি করতে পারি, আমাদের বাজেটও বাড়বে। কিন্তু আমার কাছে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে আমার কাজ। মানে, একজন শিল্পী হিসেবে আমি কী দেখাতে চাই।

মাহমুদুল হাসান আদনান

একটি ওয়েব কনটেন্ট তৈরি করতে হবে, শুধু এমন চিন্তা থেকে কোনো কিছু সৃষ্টি করা উচিত নয়। পারিপার্শ্বিক সব বিষয়ের ওপর খেয়াল রেখে একটি ওয়েব কনটেন্ট তৈরি করা প্রয়োজন। যেমন আমি আমার ওয়েব সিরিজ ‘ঢাকা মেট্রো’তে রাজধানীর নাগরিক জীবনের একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। পরিচালক হিসেবে এটিই আমার কাজ। আমি যদি চিন্তা করতে চাই, ঢাকা মেট্রো তৈরি করলে লাভ হবে না ক্ষতি হবে—তাহলে আমার কাজটি পূর্ণতা পাবে না। এখানেই কিউরেটরের প্রয়োজন।

লোকেশন: ওয়েসিস লাউঞ্জ, ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটন
ছবি: সৈয়দ অয়ন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top