skip to Main Content

ফিচার I মাংসের মেরিনেটিং

মাংসের পদ যা-ই হোক না কেন, তা হতে হয় নরম ও সহজপাচ্য। ঈদের কয়েকটি দিনে এ খাবারের সে রকম উপভোগ্য হয়ে ওঠা চাই

ঈদুল আজহার পরের কিছুদিন পাতে মাংসের পদ বেশি থাকে। তৃণভোজী হওয়ায় পশুর পেশি বেশ শক্ত হয়। এ ছাড়া গবাদিগুলোর বিচরণের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশের মাংসকে পোক্ত করে তোলে। সঠিক পদ তৈরি করতে তা উপযুক্ত নরম করে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, অন্যথায় খেতে সুস্বাদু হয় না। ভালোভাবে নরম না করা গেলে মাংস যথাযথ সেদ্ধও হয় না। এতে বিভিন্ন জীবাণু থেকে যেতে পারে, যা খেয়ে মানুষের রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। করোনা দুর্যোগের এই সময়ে মাংসের জীবাণু সম্পর্কে সচেতন থাকাই উত্তম। মাংস কাটা ও মেরিনেট করার মাধ্যমে নরম করা যায়। কিছু অম্লীয় উপাদান ব্যবহারেও সেটি সম্ভব। এ জন্য ব্যবহৃত হতে পারে কিছু অ্যানজাইমও।
মাংস নরম করতে চাইলে টুকরো করার ধরনে বিশেষ মনোযোগী হতে হয়। কর্তনের একটি পদ্ধতির নাম ‘স্কোরিং’। মানে, মাংসকে আড়াআড়ি ও অগভীর করে কাটা। এতে প্রোটিন ভেঙে মাংস নরম হয়। কাটার সময় আঁশ থেঁতলে গেলে সেদ্ধ হতে সমস্যা হতে পারে। তাই ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করে আঁশের বিপরীত দিক থেকে কাটতে হয়।
রান্নার আগে মাংস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসা ভালো। এতে নরম হতে সুবিধা হয়।
রান্নার আগে মাংস ‘পাউন্ড’ করে নেওয়া যেতে পারে। সহজ কথায় হাতুড়িপেটা করা। তবে হাতুড়ি ছোট ছোট কাঁটাযুক্ত হলে ভালো হবে। বাজারে নিডল বা পয়েন্ট যুক্ত টেন্ডারাইজার টুল পাওয়া যায়। সেটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
মেরিনেটের মাধ্যমেও মাংস নরম করে নেওয়া সম্ভব। অম্লীয় উপাদানযোগে সেটি করা যায়। যেমন লেবু, ভিনেগার, দই ইত্যাদি। এসব মেখে আধা ঘণ্টা রেখে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বেশি সময় ধরে রাখলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কেননা অম্ল মাংসের প্রোটিনের গঠন ভেঙে ফেলে। কিছু অ্যানজাইম দিয়েও মেরিনেট করা যায়। এতে মাংস নরম হবে।

এ ক্ষেত্রে পেঁপে, আনারস কিংবা নাশপাতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব ফলের যেকোনো একটি বেটে মাংসে মেখে রাখলে নরম হবে। সঙ্গে পছন্দসই মসলা যোগ করতে হয়। আনারস দিয়ে করলে মেরিনেটের ব্যাপ্তি ৩০ মিনিট হওয়া ভালো। তার বেশি হলে এই ফলের অ্যানজাইম মাংসকে অতিরিক্ত নরম করে দেবে। হাতে সময় থাকলে মাংসে শুধু লবণ মেখে দুই ঘণ্টা রেখে দেওয়া যেতে পারে। এটি মাংসের ফাইবার ভাঙার অন্যতম উপাদান। রান্নার আগে সব লবণ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এসব ছাড়াও বাজারে টেন্ডারাইজিং পাউডার পাওয়া যায়। এতে একধরনের অ্যানজাইম থাকে, যা মাংসের শক্ত ফাইবার ভেঙে ফেলে। এভাবে মাংস নরম করে রান্নার পর আরও কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। যেমন তাড়াহুড়া করে মাংস রান্না উচিত নয়। এতে ঠিকমতো সেদ্ধ হবে না, স্বাদ নষ্ট হবে। বেশি পরিমাণে মাংস একবারে রান্না না করাই উত্তম। অনেকেই নরম করার উদ্দেশ্যে মাংস অতিরিক্ত রান্না করেন। কিন্তু এটি এমনই এক উপাদান, যা কম বা বেশি তাপে নয় বরং উপযুক্ত তাপ পেলেই খাদ্যোপযোগী নরম হয়। মোটামুটি ১২৫ থেকে ১৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রান্না করলে ভালো ফল মেলে। রান্না হয়ে গেলে কিছুটা সময় পাত্রেই রেখে দেওয়া ভালো। এতে আঁশগুলো নরম হয়ে আসে। সে ক্ষেত্রে পাত্রটি ঢেকে রাখতে হবে।
I ফুড ডেস্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top