skip to Main Content

তনুরাগ I রোজকার রুটিনে

মুখত্বকের সঙ্গে দেহত্বকের অসামঞ্জস্য? সমাধানে ভরসা একদম আলাদা, বিশেষায়িত রূপ রুটিন

মুখে যেমন ফেশিয়াল ক্লিনজার, এক্সফোলিয়েটর ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়, তেমনি ঘাড়ের নিচের ত্বক, হাত-পা ও শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকেরও যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ, আমাদের ত্বক তো আর ঘাড়েই শেষ হয়ে যায় না। তাই শুধু মুখত্বকের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করে শরীরের বাকি আশি ভাগ এমনিতে ফেলে রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়; বরং প্রয়োজন আলাদা বডি কেয়ার রুটিন।
যারা নিয়মিত স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলেন, তাদের জন্য বডি কেয়ার রুটিনের শুরুর ধাপটি অনুমান করা সহজ। শরীরের যে অংশেরই যত্ন নেওয়া হোক না কেন, প্রথম শর্ত হলো আগে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করা। তবে কার্যকরভাবে ত্বক পরিষ্কার করা আর পরিষ্কার করতে গিয়ে স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট করে ফেলার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। বাজারে এমন কিছু ক্রিমি বডি ওয়াশ রয়েছে, যেগুলো ত্বককে হাইড্রেট করার পাশাপাশি কোমল ও সুগন্ধি গোসলের নিশ্চয়তা দেয়। এগুলোর সোপ-ফ্রি ফর্মুলা ত্বককে সতেজ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে। তবে এ ক্ষেত্রে শরীরের জন্য আলাদাভাবে তৈরি বিশেষ ক্লিনজার দিয়ে দেহত্বক পরিষ্কার করে নেওয়াটা নিশ্চিত করতে হবে; ফেসওয়াশ দিয়ে নয়। কোমল বডিওয়াশ বেছে নিতে হবে, যা ত্বকে জ্বলুনি তৈরি করবে না বা শুষ্ক করে ফেলবে না। লুফা, ওয়াশ ক্লথ বা শুধু হাত দিয়ে ফেনা তৈরি করে শরীরের ত্বক ধুয়ে নেওয়া যায়।
বডি কেয়ার রুটিনে রিফাইনিং ও রিসারফেসিং এক্সফোলিয়েটর খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিউমিস বাফিং বিডস শরীরের ত্বকের মৃতকোষ ও অবাঞ্ছিত টেক্সচার দূর করে। অন্যদিকে গ্লাইকোলিক ও ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের কোষ পুনর্নির্মাণকে প্রভাবিত করে। আর তা লোমকূপ ও বিবর্ণতা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া স্ক্রাব দিয়ে এক্সফোলিয়েট করা একটি কৌশলপূর্ণ কাজ। অনেকেই জ্বলুনির ভয়ে ত্বকে খুব বেশি স্ক্রাব করতে চান না। তবে কাজটি নিয়মিত করা জরুরি, যাতে মৃতকোষ জমে ত্বক মলিন না দেখায়। আর এক্সফোলিয়েশনের জন্য বডি স্কিন বেশি উপযুক্ত। কারণ, মুখত্বকের চেয়ে সাধারণত বডি স্কিন দৃঢ় হয়। সে কারণেই বেশি বেশি স্ক্রাবের বিষয়ে অতটা সতর্ক থাকতে হয় না। এক্সফোলিয়েশনের জন্য শাওয়ার রুটিনে যোগ করে নেওয়া যেতে পারে সুগার স্ক্রাব। এটি আলতো করে ম্যাসাজের পর শরীর এক্সফোলিয়েট করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই বা তিনবার করে নিলেই চলবে। কনুই, হাঁটু ও গোড়ালি—এসব জায়গায় বেশি ফোকাস করা প্রয়োজন। কেননা এই জায়গাগুলোর রুক্ষ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকায় এক্সফোলিয়েশনের প্রয়োজন হয় বেশি।
হাইড্রেট করে নিতে হবে পা থেকে মাথা পর্যন্ত। ক্লিনজিং, এক্সফোলিয়েটিং ও শেভিং—প্রতিটি প্রক্রিয়া শেষে ময়শ্চারাইজ করে নিতে হবে। শাওয়ারের পর শরীর আর্দ্র থাকার সময়টাই ত্বকে হাইড্রেশন যোগের আদর্শ সময়। ঘাড় থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত পুরো শরীরে মসৃণ করে হাইড্রেটিং ক্রিম বা লোশন লাগিয়ে নিতে হবে। পোশাক পরে নেওয়ার আগে লোশন বা ক্রিম গায়ে মেখে পুরোপুরি শুষে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
তবে ত্বক ময়শ্চারাইজড বা হাইড্রেটেড রাখার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষের পছন্দের শীর্ষে আছে বডি অয়েল। কেননা, এগুলো বহুগুণে সমৃদ্ধ ও ত্বকের বহুমুখী উপকার সাধন করে। যেমন ব্ল্যাক সিড অয়েল। এটি ত্বককে মেরামত করার পাশাপাশি ব্রণের চিকিৎসা, কোষ পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ওয়ান, বিটু, বিথ্রি, এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি ও সিক্স, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম এবং আটটি এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড। পাশাপাশি অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বকের বিবিধ সমস্যার সমাধানে এ এক অব্যর্থ দাওয়াই।

 তাসমিন আহমেদ
মডেল: স্নিগ্ধা ও অর্পা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top